

ময়মনসিংহ জেলা ফুলবাড়িয়া উপজেলা ভবন নির্মাণে অনিয়ম দুর্নীতি, উপজেলা প্রকৌশলী বহাল তবিয়তে।
ময়মনসিংহ থেকে নিজস্ব প্রতিবেদনঃ
মোঃআমিরুল ইসলাম হীরাঃ
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ৭০নং বিদ্যানন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজে অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ময়মনসিংহের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুজ্জামানকে স্ট্যান্ড রিলিজের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে ওই নির্মাণ কাজের তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা প্রকৌশলী মো. মাহাবুব মুর্শেদ ফুরফুরে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ভেতরে-বাইরে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
বুধবার (২ আগস্ট) বিকেল ৪টায় খোদ নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুজ্জামান তার স্ট্যান্ড রিলিজের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ২৬ জুলাই তিনি স্ট্যান্ড রিলিজের আদেশ পেয়েছেন জানিয়ে বলেন, এখনো আমি ময়মনসিংহেই দায়িত্ব পালন করছি।
ঊর্ধ্বতন কর্তাদের পরবর্তী নির্দেশ পেলে আমি এখান থেকে চলে যাব। কিন্তু কি অপরাধে আমার বিরুদ্ধে এই আদেশ দিয়েছেন, তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবেন।
আশরাফুজ্জামান আরও বলেন, গত ২১ জুন নির্মাণাধীন ভবনটি পরিদর্শন করে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হৃদয় এন্টারপ্রাইজকে ভবনটি ভেঙে পুনরায় নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছি। এরপর ঘটনাটি প্রধান প্রকৌশলী মহোদয়কে জানানো হলে তিনি ঢাকা বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ রেজাউল করিমকে প্রধান করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটির তদন্ত কাজ এখনও চলমান।
তবে এই নির্মাণ কাজের তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা প্রকৌশলী মো. মাহাবুব মুর্শেদের দায় থাকলেও তার বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় নানা গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলে।
জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ৯২ লাখ টাকা ব্যয়ে দুই তলাবিশিষ্ট ভবনের জন্য এক তলা ভবন নির্মাণের এই কাজটি করেছেন মেসার্স হৃদয় এন্টারপ্রাইজ। চুক্তি অনুযায়ী গত বছরের ২৭ জানুয়ারি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করে চলতি বছরের জুন মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
একাধিক ঠিকাদার, শিক্ষক ও সাংবাদিক মহল আক্ষেপ করে বলেন,ঠিকাদারকে চুরি করার সুযোগ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সে ফুরফুরে অবস্থায় আছে।তার কোন ব্যবস্থা হচ্ছে না এখনো। উপজেলা বাসীর প্রাণের দাবি সঠিক বিচার দাবি করছি।উপজেলা প্রকৌশলী এখনও বহাল তবিয়তে আছে।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকৌশলী মোঃ মাহাবুব মুর্শেদ বলেন, তদন্ত কমিটি সাত দিনের মধ্যে নির্মাণাধীন ভবনটি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন। সে মোতাবেক ভবন ভাঙা হচ্ছে। আশা করছি দুই একদিনের মধ্যে ভবন ভাঙার কাজ শেষ হবে।
এ সময় দায়িত্বে অবহেলায় ব্যবস্থা গ্রহণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, আমাকে শোকজ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আমি শোকজের জবাব দিয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও এলজিইডি ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ রেজাউল করিমের বক্তব্য জানা যায়নি।
তবে তদন্ত কমিটির সদস্য ও এলজিইডির মান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মোঃএনামুল হক খান বলেন, তদন্ত কাজ চলমান আছে। এখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ শেষ হয়নি। তদন্ত শেষে দ্রুত সময়ে প্রতিবেদন দেওয়া হবে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার বিষয়ে আমার জানা নেই।