মোঃআমিরুল ইসলাম হিরা, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ফুলবাড়ীয়া উপজেলা আতংক এমপি আব্দুল মালেক সরকার আক্তার উল আলম শুভ হত্যা মামলায় আরিফের ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর বগুড়া সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিস সহকারী তানজিলের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ গাইবান্ধায় গৃহবধূর গোসলের ভিডিও ধারণকালে পুলিশ সদস্য আটক! ৬ ষ্ঠ টেকনাফ উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যানদের নিয়ে টেকনাফ উপজেলা পরিষদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বগুড়ায় “কাচ্চি ভাই” এবং “সিরাজ চুই গোস্ত” ২টি প্রতিষ্ঠানের জরিমানা আদায় জজের পেসকারের শাস্তি ও অন্যত্র বদলী দাবী করে নিজ এলাকায় মানব বন্ধন রক্ষক যখন ভক্ষকের ভূমিকায়: বন ধ্বংসে বনকর্মীরা প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ র্যাব-১২ সদর কোম্পানির অভিযানে ১৬০ বোতল ফেন্সিডিলসহ আটক ২
×
প্রচ্ছদ জাতীয়
ফুলবাড়ীয়ার আতংক এমপি আব্দুল মালেক সরকার
নিউজ ১৬ নিউজ ১৬,ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় : ১৩ জুলাই ২০২৪, বিকাল ৬:৬ সময় আপডেট সময় : ১৩ জুলাই ২০২৪, বিকাল ৬:৬ সময়
ফুলবাড়ীয়ার আতংক এমপি আব্দুল মালেক সরকার
ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার এমপি আব্দুল মালেক সরকার ক্ষমতায় আসার পর পরই এলাকায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসা, জমি দখল, ছেলের হাতে বাবা খুন, বাবার হাতে ছেলে খুনের ঘটনার শেষ নেই। তাদের মধ্যে সব চেয়ে আলোচনায় এসেছে এমপি’র দাওয়াতে এনামুর রহমান রবি তার একটি প্রোগ্রামে অংশ গ্রহন করলে এমপি’র মদদ পৃষ্ট জয়নাল আবেদীন তাকে মঞ্চ থেকে মারধর করে নামিয়ে দেয়ার ঘটনার জেরে দেওখোলা বাজার মসজিদ মার্কেটে ১৩ মে ঘটে যাওয়া সেই ঘটনার ১ জন নিহত ও ৬ জন আহত হয়। পরে ২৬ মে হাইকোর্ড থেকে আব্দুল মালেক সরকার এমপির সহযোগিতায় ৪২ দিনের জামিন নেন জয়নাল গং। ভাগ্যের নির্মমতায় ২৭ জুন সকাল ৯টার দিকে মৃত্যুর কোলে ডলে পরেন আক্তার উল আলম সরকার শুভ। গত ৭ জুলাই পর্যন্ত জামিনের মেয়াদ থাকলেও গত ৪ জুলাই জয়নাল আবেদীন, আরিফুল ইসলাম, ফারুক আহাম্মেদ, সাদ্দাম হোসেন, মাহির মিশু, শাহজাহানসহ ৬ জন আসামী গত বৃহস্পতিবার আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। পরে আদালত তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করেন। গত ১০ জুলাই ধার্য তারিখ থাকায় সকল আসামীই হাজির হলে আলাদত লোকমান নামের একজনকে বাধ দিয়ে ১৪ জনকেই জেল হাজাতে প্রেরণ করে।
আলহাজ¦ আব্দুল মালেক সরকার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় অনিয়ম, দুর্নীতি, অসদাচরণ, ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বৈরাচারী মনোভাব ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে পরিষদের দুই ভাইস চেয়ারম্যানসহ ১৩ ইউপি চেয়ারম্যান সুনিদিষ্ট ১৩ অভিযোগ তুলে ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারের কাছে অনাস্থা প্রস্তাব করেন। অনাস্থা প্রস্তাব হাইকোর্ড থেকে রিট করে টাকার জোরে বহাল হওয়ার খবর পাওয়া যায়।
গত ৩ মার্চ ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ার সংসদ সদস্য আব্দুল মালেক সরকার সংসদ অধিবেশনে ২০০৩ সালে সাধারণ সম্পাদক থাকা অবস্থায় কয়েকটি মামলা উল্লেখ্য করে বক্তব্য প্রদান করায় স্থানীয় রাজনীতি ও জন সাধারণের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ঝর তুলেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে। জন্ম নিয়েছে বিভিন্ন প্রশ্নের। পরে বিষয়টি সত্য যাচাইয়ের জন্য ফুলবাড়ীয়া উপজেলার একজন বাসিন্দা গত ১৯ জুন তথ্য আইনে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার বরাবরে একটি আবেদন করেন। প্রাথমিক অবস্থায় মৌখিক ভাবে সমস্ত মামলার কথা মিথ্যা বলে জানিয়েছেন প্রশাসন। এ নিয়েও ফুলবাড়ীয়ায় খুব আলোচিত আলহাজ¦ আব্দুল মালেক সরকার এমপি। হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানাযায়।
৭ জানুয়ারী জাতীয় নির্বাচনের পর তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ফুলবাড়ীয়া উপজেলা থেকে নির্বাচিত হওয়ার পর পরই ১৩ ইউনিয়নে শুরু হয় স্মট কার্ড বিতরণ। স্মাট কার্ড বিতরণে সময় টোকেন, ফিতা ও কভার বিক্রিতে ছিলো এমপির ছেলে রিফাত সরকারের নিরব চাঁদাবাজী।
স্মাট কার্ড বিতরণ কারীরা জানান, এমপি’র ছেলের নেতৃত্বে আমাদের কাছ থেকে বিভিন্ন নেতা কর্মীরা চাঁদা নিয়েছে। একদিন এমপি’র ছেলে মাঠে বসে থেকে টাকা নিয়ে গেছে। টাকা না দিলে আমরা সে দিন ব্যবসা করতে পারিনি।
নির্বাচনের কিছুদিন পর নৌকা ও ট্রাক মার্কার সমর্থকদের মাঝে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে এনায়েতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বুলবুল হোসেন ট্রাক মার্কায় নির্বাচন না করায় চেয়ারম্যাকে প্রধান আসামী করে ফুলবাড়ীয়া থানায় মামলা দায়ের করার জন্য অফিসার ইনচার্জকে চাপে ফেলে মামলা এফআইআর করান এমপি মালেক সরকার, দাবী চেয়ারম্যান বুলবুলের।
রাবার বাগানে পাতা বিক্রি থেকে শুরু করে, রাবার অফিসে চাঁদা, বন অফিসে চাঁদা, খাদ্য গুদামে চাঁদা, বিভিন্ন সরকারি অফিসে চাঁদাবাজী করে আসছেন এমপির লোকজন যাদের মধ্যে এখন এমপি’র ছেলের হয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভাঙ্গারী রাকিব, বাদল, অপি। গরীব বান্ধব সমাজ সেবা অফিসারকে প্রতি ভাতা কার্ড বাবদ টাকা দাবি করেন বলে বিশ^স্তসূত্র জানায়। পরে সমাজ সেবা কর্মকর্তা তা মেনে নেননি। উপজেলা চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায়ও প্রতি ইউনিয়নের ৭ টি করে নলক’প বরাদ্ধের প্রতিটিই কলই সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পারভীন সুলতানা ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শরাফ উদ্দিন শর কে দিয়ে বিক্রি করিয়েছেন। এছাড়াও উপজেলা চেয়াম্যানের যত প্রকল্প দেয়া হয়েছে সকল প্রকল্পে ৫০% ভাগ তাকে অগ্রীম প্রদান করতে হয়েছে মেম্বার চেয়ারম্যানদের। এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম ৪০ দিনের কর্ম সৃজন কর্মসূচির বিলের প্রায় ৫০% ভাগ তাকেই দিতে হয়। তাই এলাকায় কোন কাজই হয়নি।
কালা জ¦রের টিম লিডার হিসেবে ফুলবাড়ীয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স উপজেলা থেকে ৪০ জন টিম লিডার নিয়োগ দিলে এখানেও লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়োগ বাণিজ্য করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে উপজেলা স্বস্থ্য কমপ্লেক্সের জাহাঙ্গীরের সাথে কথা বললে তিনি বলেন আমরা বুঝতে পেরেছি এখানে টাকা লেনদেন হয়েছে। যখন আমরা ট্রেনিং করাই তখন আমাদের বারবার প্রশ্ন করা হয়েছে।
নাওগাঁও ইউনিয়নের ইউপি সদস্য নূরুল ইসলাম মেম্বার জানান, রাবার বাগানের অফিসের ভিতর গভীর নলক’পের পিছনে ৩ একর জমি কোন টেন্ডার ছাড়াই এমপির মদদে দখল করে নিয়েছে খলিলুর রহমান। আমাদের এলাকায় যারা গরীব রাবার সংগ্রহ করে তারাই রাবারের পাতা বিক্রি করত। এবার এমপি’র লোকজন সেই পাতা বিক্রি করেছে।
স্থানীয়রা জানান, আমারা দেখি কয়েক দিন পর পর এমপি’র লোকজন মটর সাইকেল দিয়ে এসে অফিসে ডুকে আবার চলে যায়। পরে জানতে পারি টাকা নিতে এসেছিলো। আমরা শুনেছি এবার নাকি ভাতার কার্ডেও এমপি ভাগ বসিয়েছিলো কিন্তু অফিসারের কারণে টাকা নিতে পারেনি।
সম্প্রতি ১১ কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্ধ চেয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর কথা থাকলেও জেলা প্রশাসকের সু-দৃষ্টিতে তা সফল হতে পারেন নি বলে সূত্র জানায়। পরে বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেন ফুলবাড়ীয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তিনি বলেন বিশেষ বরাদ্দ চেয়ে ডিসি স্যারের মাধ্যমে সচিবের কাছে পাঠানোর পরিকল্পনা করেছিল। পরে এটা হয়নি।
এমপি’র ছেলে রিফাত সরকার ভাঙ্গারী রাকিবসহ কয়েক জনকে দিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় মরণ নেশা হেরোইন, ইয়াবা, গাঁজা সহ নারীদের দিয়ে দেদারছে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে রাকিবের সাথে মুঠো ফোনে কথা বললে প্রথমে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করার হুমকি দেন।
সম্প্রতি ফুলবাড়ীয়া উপজেলার মিশুক, বেবি ট্যাক্সি টেক্সিকার সিএনজি চালিত অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়নের একটি কমিটি গঠিত হয়। যা এমপি ও এমপির ছেলের পছন্দ হয়নি বলে তা বাতিল করে দেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘোষনা দেন ফুলবাড়ীয়ায় কোন সড়কে চাঁদাবাজী হবে না। কিন্তু সেই রাতেই এমপি’র ছেলের মাধ্যমে পুনরায় নতুন কমিটি অনুমোদন করে তা গোপন রাখেন। সঠিক সময়ে চাঁদাবাজী করার আশায়।
বিষয়টি নিয়ে সাবেক কমিটিতে থাকা একজন জানান, আমরা কমিটি এনে ছিলাম এমপি ও এমপি’র পুত্রের পছন্দ হয়নি। পরে তারা আবার কমিটি নিয়ে এসেছে।
সম্পতি তিনটি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেয়া হবে বলে এজেদুলকে দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছিলেন কয়েক লক্ষ টাকা। পরে বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী ডিসির প্রতিনিধি থাকা সাপেক্ষে নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পরেন আব্দুল মালেক সরকার। বর্তমানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এজেদুলকে দিয়ে চালানো হচ্ছে নিরব চাঁদাবাজী। করছে কমিটি বাণিজ্য।
এ ব্যাপারে এজেদুলের সাথে কথা বলার জন্য মুঠো ফোনে বলেন আমি এখন ব্যস্ত খেলা দেখতে এসেছি পরে কথা বলবো। পরে আর ফোন রিসিভ করেন নি।
বর্তমানে চলমান রমরমা ব্যবসা হয়ে দাড়িয়েছে ডিও লেটার বাণিজ্য। যা আগে ইলিয়াস ও জুলহাস নিয়ন্ত্রন করলেও এখন তা এমপি’র ছেলে রিফাত সরকারই করেন যা দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। টাকা নেয়ার দায়িত্ব মাদক ব্যবসায়ী ভাঙ্গারী রাকিব। প্রতিকার পাচ্ছে না একজন গরীব দুস্থ ও অসহায় মানুষ গুলোও।
গত ৫ জুলাই ফুলবাড়ীয়া উপজেলায় ঝমকালো আয়োজনের মাধ্যমে কৃষকদের মাঝে ৫ কেজি করে ধান বীজ ও ২০ কেজি করে সার বিতরণ করেন উপজেলা প্রশাসন সেখানে উপস্থিত ছিলেন আব্দুল মালেক সরকার এমপি পরে জানাযায় ১৯০০ কৃষক উপকার ভ’গীদের মাঝে প্রায় অর্ধেক এমপি নিয়ে জান বলে সূত্র জানায়।
এ ব্যাপারে কৃষি অফিসার নূর মোহাম্মদের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আপনারাত সবই জানেন। আসলে এ দেশটাকে একা ঠিক করা যাবে না। যদি নিজে থেকে ঠিক না হয়।
এখানেই শেষ নয় এমপি’র আছে একটি উপদেষ্টা কমিটি যারা এমপিকে বিভিন্ন বুদ্ধি দিয়ে সহযোগিতা করেন তাদের মধ্যে জয়নাল আবেদীন এখন হত্যা মামলায় জেলে বাকীরা হলেন নজরুল প্রফেসর, মুক্তা, এজেদুল।
এ ব্যাপারে এমপি’র ছেলে এহসানুল আহমেদ রিফাত সরকারকে মুঠো ফোনে জানান, রাকিব আমাদের সাথেই চলে, বাদল ও অপি স্ট্যান্ডে লাইন মেনের কাজ করে। মাদকের বিষয়ে আমার কিছু জানানাই। ডিও লেটার আমার বাবাই দেখেন। আমাদের সরকারি পিএসও ডিও লেটার নিয়ে কথা বলতে পারে না।
বিষয়টি নিয়ে আলহাজ¦ আব্দুল মালেক সরকারকেও মুঠো ফোনে ফোন দিলে রিং বাজলেও রিসিভ করেননি।
স্থানীয় জনগন বলেন, নির্বাচনের আগে আমরা বলে ছিলাম ফুলবাড়ীয়া বাসিকে রাজাকার মুক্ত করব। তাই আলহাজ¦ আব্দুল মালেক সরকারকে এমপি মনোনীত করি। এখন দেখছি আমরা বিরাট বড় ভ’ল করে ফেলেছি। আমরা খাল কেটে কুমির এনে ফেলেছি। কুমিরের পেটত কিছু দিয়েই বরাতে পাচ্ছি না। আল্লাহ এই কুমির থেকে আমাদের রাক্ষা করো। মাননীয়, প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর ইউনুস সাধারণ জনগণ এলাকা বাসির দৃষ্টি কামনা করেন।দুর্নীতিরএমপি আব্দুল মালেক সরকার তার সহকর্মী বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার জন্য দাবি গণদাবি দাবী জানাচেছন। ফুলবাড়ীয়ার রাজনৈতিক ও সাধারণ জনগণ