ময়মনসিংহ জেলা ফুলবাড়িয়া উপজেলা ওয়াক্ফ এষ্টেটের দেড় কোটি টাকার সম্পত্তি দখল
ময়মনসিংহ থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা প্রতিবেদনঃমোঃআমিরুল ইসলাম হিরা ঃওয়াক্ফ এষ্টেটের ১৩০ শতক ভূমিই অবৈধ দখলদারদের হাতে চলে গেছে। জমি হিসাবে যার বাজারমূল্য প্রায় দেড় কোটি। মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন ওয়াকফ এস্টেট প্রশাসকের কোনো কার্যক্রম নেই।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার বাকতা ইউনিয়নের প্রায় শতবছরের পুরো চাঁদপুর ভাটিপাড়া মসজিদের ওয়াক্ফ এষ্টেটের দেড় কোটি টাকার সম্পত্তি দখলের অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশি আব্দুল মান্নানের উপর। তিনি ওই এলাকার মৃত সিরাজুল ইসলামের পুত্র। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর কমিটির নেতৃবৃন্দ অভিযোগ দায়ের করেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার বাক্তা ইউনিয়নের চাঁদপুর মৌজার আরএস ২৮৮ নং খতিয়ানে ১ একর ৩০ শতক ভূমি চাঁদপুর ভাটিপাড়া মসজিদ ওয়াক্ফ এষ্টেট পক্ষে সেক্রেটারী নামে রেকর্ড হয়। প্রায় ৪০ বছর পূর্বে সৈয়দ আলী আকন্দ নামের ব্যক্তি ওয়াক্ফ রেজিস্ট্রি করে দেন। বর্তমানে মসজিদ পরিচালনা পর্ষদের দখলে মাত্র সাড়ে তিন শতক জমি।
এ প্রসঙ্গে জমির দখলকার আফতাব হোসেন বলেন, জমি বাপ-দাদার, পঁয়ত্রিশ বছর যাবৎ চাষবাদ করছি, কোনো দলিল নাই। অপর দখলকার আব্দুল মান্নান জানায়, সাবেক কমিটির সভাপতি জামাল উদ্দিনের কাছ থেকে ৪০ বছর আগে ১৬শ টাকা দিয়ে জমি কিনছি। সে কোনো দলিল রেজিস্ট্রি করে দেয়নি। কয়েক দফা শালিস হয়েছে। কিন্তু বর্তমান মসজিদ ও মাদ্রাসা কমিটির লোকজন জমির দখল ছেড়ে দিতে বলছে। আমি বৃদ্ধ বয়সে কোথায় যাবো?
শুধু তাই নয়, বাকী ১২৩ শতক জমি চাঁদপুর ভাটিপাড়া গ্রামের মরহুম মুছাকারী পুত্র আব্দুল মান্নান, ছোহরাব আলী, মদন উদ্দিনের পুত্র আমজাদ আলী ওরফে আঞ্জু, জোবেদ আলীর পুত্র সৈয়দ আলী, আইন উদ্দিনের পুত্র মফিজ উদ্দিনরা দখলে নিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে, মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি কাজল মাস্টার বলেন, আরএস-২৮৯নং খতিয়ান চাঁদপুর ভাটিপাড়া মাদ্রাসা নামে হাল ৩২৭৬ দাগে .৬ শতক জমি রেকর্ড রয়েছে। সিরাজ আলীর পুত্র আব্দুল বারেক বেদখল করে রেকেছে। তাঁকে দখল ছেড়ে দিতে বললে উল্টো হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। আমি আদালতে উচ্ছেদ মামলা দিবো। সে এলাকায় বলে বেড়ায় জমির মালিক। কিন্তু বিচার বসালে বলে, কোনো দলিল নাই।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির পর্ষদ সভাপতি গোলাম মোস্তফা বলেন, সাবেক কমিটির সভাপতি নায়েব আলী আকন্দ ৭ বছর যাবৎ মসজিদের আয়-ব্যয়ের কোনো হিসাব দেয়নি। মসজিদের ফান্ড থেকে ১৪ লাখ টাকা উধাও। দেড়শত বছরের পুরনো মজিদের নাম পরিবর্তন করে হাজী সৈয়দ আলী দেয়ার পায়তারা চালাচ্ছে। এটা কখনো সম্ভব নয়। একটি সংঘবদ্ধ চক্র ওয়াক্ফ এষ্টেটের সম্পত্তি দখলে উঠে-পড়ে লেগেছে।
এলাকার একাধিক মুসল্লী অভিযোগ করেন, আমাদের প্রায় দেড় কোটি টাকা সম্পত্তি এলাকার প্রভাবশালীরা জবরদখল করে ভোগদখল করছে। আমরা তাদের সাথে পারিনা বিদায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ে করেছি।
ফুলবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ নাহিদুল করিম এর সাথে একাধিকারবার মুঠো ফোনে যোগাযোগ করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
আমিরুল ইসলাম হীরা
ময়মনসিংহ