শেষ পর্যন্ত তিনি জয়ী হয়ে চমক দেখিয়ে দিলেন।
শনিবার (৯ মার্চ) অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি ৭৪৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ‘আওয়ামী লীগ সমর্থিত’ প্রার্থী চশমা প্রতীকের হেলাল উদ্দিন পেয়েছেন ৪৯০ ভোট।
আনারস প্রতীক নিয়ে সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী শফিকুল আলম পেয়েছেন ১৩৩ ভোট।
সবশেষ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জয়ী হয়েছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার।
ওই নির্বাচনটিও ছিল এখনকার মতো নির্দলীয়। তবে বিভিন্ন কারণেই নির্বাচনটি দলীয় রূপ নেয়। দলে ‘বিভাজন’ থাকলেও নেতাকর্মীদের বড় অংশ আল-মামুন সরকারের পক্ষে কাজ করায় জয় সহজ হয়। তবে এবার দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ছিল গাছাড়া ভাব।
শেষদিকে এসে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে হেলাল উদ্দিনের পক্ষে কাজ করার আহবান জানানো হয়।
উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রার্থীরা ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার দুইবারের মেয়র মো. হেলাল উদ্দিন (চশমা প্রতীক), জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃশফিকুল আলম (আনারস প্রতীক) ও জেলা পরিষদের সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করা মো. বিল্লাল মিয়া (ঘোড়া প্রতীক)।
জেলার নয়টি উপজেলা, পাঁচটি পৌরসভা ও ১০০টি ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা এ নির্বাচনে ভোট দেন। মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ১৩৮৪। এর মধ্যে নাসিরনগর উপজেলায় ১৭১ জন, সরাইল উপজেলায় ১১৯ জন, আশুগঞ্জ উপজেলায় ১০৪ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় ১৬১ জন, বিজয়নগর উপজেলায় ১৩০ জন, কসবা উপজেলায় ১৪৬ জন, আখাউড়া উপজেলায় ৮১ জন, নবীনগর উপজেলায় ২৮৮ ও বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় ১৮৪ জন ভোটার।
নির্বাচনে দলীয়ভাবে মনোনয়ন দেয়া না হলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ থেকে মো. হেলাল উদ্দিনকে ‘সমর্থন’ দেওয়া হয়। হেলাল উদ্দিন ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতিতে আসেন।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা হেলাল উদ্দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভায় দুইবার মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি।
অপর প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শফিকুল আলম জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি। নানা কারণে দলের সঙ্গে তার বিরোধ সৃষ্টি হয়। এরপর থেকে তিনি দলীয় কার্যক্রমে অনেকটাই দূরে। তবে প্রতিকূল অবস্থায়ও তিনি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
মো. বিল্লাল মিয়ার রাজনৈতিক কোনো পদ-পদবী নেই। পেশায় তিনি ব্যবসায়ী। বিল্লাল মিয়া গত জেলা পরিষদ নির্বাচনে আশুগঞ্জ উপজেলা থেকে সদস্য জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। চেয়ারম্যান পদে লড়াই করতে তিনি সদস্য থেকে পদত্যাগ করেন। শেষ পর্যন্ত তিনি জয়ী হয়ে চমক দেখিয়ে দিলেন।
২০২২ সালের ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হওয়া জেলা পরিষদের নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ও বীরমুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করেছিলেন। ২০২৩ সালের ২ অক্টোবর তিনি মারা গেলে পদটি শূন্য হয়। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী তিনি আজ চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন।