
মো: হাবিবুর রহমান:
মিজানুর রহমান বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) এর অফিস সহায়ক হিসেবে দীর্ঘদিন কর্মরত আছেন। সেই সুবাদে সাবেক মহাপরিচালক যখন অতিরিক্ত মহাপরিচালক অপারেশন এর দায়িত্বে ছিলেন তখন মিজানুর রহমানের সাথে সখ্যতা গড়ে উঠে। তার ক্ষমতাবলে মিজানুর রহমান বদলি বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য ও রেলের বাসা বরাদ্দ বাণিজ্য করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়েছেন। তেজগাঁও রেলওয়ে কলোনিতে নবনির্মিত ভবন এর ১৫ টি বাসার মধ্যে গত ৩১/১০/২০২৪ ইং তারিখে বিভাগীয় প্রকৌশলী /১ ১৪ টি বাসা বরাদ্দ দেন। এরমধ্যে চারটি বাসা থেকে মিজানুর রহমান প্রায় ১০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। অবশিষ্ট একটি বাসা আর এন বি সিপাহী মোঃ মশিউর রহমানের নামে গত ২৯/১২/২৪ তারিখে মোটা অংকের টাকার বিনিময় বিভাগীয় প্রকৌশলী/ ১ সুলতান আলী মাধ্যমে তার বিদায়লগ্নে তড়িঘড়ি ভাবে বরাদ্দ দিয়েছেন বলে জানা যায়। শুধু তাই নয় উক্ত দপ্তরের কর্মচারী থেকে শুরু করে কর্মকর্তা পর্যন্ত মিজানুর রহমানের রোষানলে পড়তে হয়। যদি কোন কর্মকর্তা ও কর্মচারী তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন তাকে সাবেক ডিজির মাধ্যমে পানিশমেন্ট খেতে হয়েছে। মিজানুর রহমানের ঘনিষ্ঠ লোক যখন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পান তখন অফিস সহায়ক মিজানুর রহমানের আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তার নামে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সাবেক রেলমন্ত্রী সুপারিশ নিয়ে ২০২১ সালে সাবেক রেলমন্ত্রী মাধ্যমে শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনিতে এ/১৭ সি এর বাসার পরিবর্তে তেজগাঁও রেলওয়ে কলোনিতে বাসা নং এল /৪৩/এ এই বাসাটি মিজানুর রহমান এর নামে বরাদ্দ নিয়ে নিজে বসবাস করার কথা থাকলেও তা না করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে সরকারি কোয়ার্টারের পাশে অবৈধ ১০ থেকে ১৫ টি ঝুপরি ঘর তৈরি করে ২ লক্ষ টাকা এডভান্স ও মাসিক ৪০ হাজার টাকা ভাড়ার বিনিময়ে অবৈধ বিদ্যুৎ পানি গ্যাস অপচয় করে বহিরাগতদের কাছে রেলওয়ের বাসা ভাড়া দিয়েছেন যা সম্পন্ন বেআইনি । শুধু তাই নয় মিজানুর রহমানের কর্তব্যরত অবহেলার কারণে তাকে গত ৩০ /১২/২০২৪ইং তারিখে তার বিরুদ্ধে ই এন্ড ডি রুল ১৯৬১ এর( ৩) বি ধারা মোতাবেক শাস্তিযোগ্য অপরাধ রেলওয়ে কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধিমালা ১৯৬১ অনুচ্ছেদ ৩ (ঘ) ভঙ্গের জন্য তার বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইবে না তার কৈফিয়ত আগামী সাত দিনের মধ্যে জানানোর নির্দেশ দেয়া হয়। এখন পর্যন্ত সে কোন প্রকার সন্তোষজনক জবানবন্দী প্রদান করেননি। যথাযত কর্তৃপক্ষ তার বদলির বিষয়ে সুপারিশ করলেও এখন পর্যন্ত সে বহাল তবিয়তে।মিজানুর রহমান অফিস চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন মেয়েদের সাথে ভিডিও কলে উচ্চস্বরে কথা বলে থাকে যাহা অন্য কর্মচারীগণ তাকে কিছু বলিলে তার চোখ রাঙ্গানি শুনতে হয়। মিজানুর রহমানের ক্ষমতার দাপট এত বেশি যে যুগ্ম মহাপরিচালক (অপারেশন) এম এ সালাউদ্দিন তার যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও মিজানুর রহমান সাবেক ডিজির নিকট কান ভারী করে অতিরিক্ত মহাপরিচালক অপারেশন পদে প্রমোশন আটকে দেন। সূত্রে জানা যায়, মিজানুর রহমান অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) নাজমুল হাসান এর নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম চালাচ্ছেন। অফিস সহায়ক পদে চাকরি করে নাখাল পাড়ায় দেড় কোটি টাকার মূল্যের ফ্লাট ক্রয় করেন এবং পূবালী ব্যাংক বাংলাদেশ রেলওয়ে কমলাপুর শাখায় ১১ লক্ষ টাকার এফ ডি আর আছে। ও জনতা ব্যাংক আব্দুল গনি রোড বিদ্যুৎ ভবন শাখায় লক্ষ লক্ষ টাকা লেনদেন হচ্ছে বলে সূত্রে জানা যায়।বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের সম্পদের বিবরণ জমা দেওয়ার নির্দেশ দিলে মিজানুর রহমান মিথ্যা তথ্য দিয়ে সম্পদের বিবরণ জমা দিয়েছেন বলে সূত্রে জানা যায়।
তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের মাধ্যমে নিরপক্ষ তদন্ত করিলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে বলে নাম না প্রকাশে একাধিক কর্মচারী এই প্রতিবেদককে জানান । উক্ত দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা দ্রুত মিজানুর রহমানকে শাস্তির আওতায় এনে তাকে বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলে বদলি করার দাবি জানান।আর না হলে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে তারা মানববন্ধন করবে বলেও জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) নাজমুল হাসানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করিলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান “আমি মাত্র একমাস হয় উক্ত দপ্তর এসেছি তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে”।
এ বিষয়ে অফিস সহায়ক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি ও তার মতামত পাওয়া যায়নি।