
মোঃ রিপন হাওলাদার
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বিতরণ ও ট্রান্সমিশন, এনার্জি ট্রেডিং এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে পুন:বীকরণযোগ্য শক্তি খাতে উন্নীত করা ছাড়াও কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে বড় কোম্পানিগুলোকে এদেশে নিয়ে আসার জন্য আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্সের (আইসিসি) মহাপরিচালক ড. রাজীব সিং।
৫ আগস্ট শনিবার রাজধানীর মহাখালী নিটল-নিলয় সেন্টারে ইন্ডিয়া বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (আইবিসিসিআই) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে আগামী ৬-৮ আগস্ট ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে ইন্ডিয়া বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (আইবিসিসিআই) এর সহযোগিতায় আয়োজিত আইসিসি বিমসটেক এনার্জি কনক্লেভ সম্পর্কে মিডিয়া কর্মীদের আরও বিস্তারিত জানানোর ঘোষণা দেওয়া হয়।
আইসিসির মহাপরিচালক বলেন, এই ব্যবসায়িক কনক্লেভের উদ্দেশ্য হল- বিমসটেক দেশগুলোর মধ্যে বিদ্যুৎ বিতরণ ও ট্রান্সমিশন, বাংলাদেশে এনার্জি ট্রেডিং এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে পুন:বীকরণযোগ্য শক্তি খাতে উন্নীত করা। এছাড়া পারস্পরিক স্বার্থের ক্ষেত্রগুলি অন্বেষণ করার জন্য কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত থেকে কোম্পানিগুলিকে এদেশে নিয়ে আসার বিষয়ে লক্ষ্য রাখবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি বলেন, শিল্প পণ্য উৎপাদন, বড় আকারের নির্মাণ সংস্থা, বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থা, নতুন এবং পুন:বীকরণযোগ্য শক্তি সংস্থাগুলো, সৌর শক্তি, তেল ও গ্যাস তৈরিতে দক্ষ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ এবং শিল্পপতিদের সমন্বয়ে একটি বড় প্রতিনিধি দল নিয়ে তিনি ঢাকায় এসেছেন। সম্মেলনের পাশাপাশি অভিজ্ঞতা বিনিময়ে বৈঠক হবে। তিনি বিশ্বাস করেন যে, এই কনক্লেভ উভয় দেশের জন্য আরও অর্থবহ এবং উপকারী ফলাফল বয়ে আনবে। জ্বালানি খাতের পাশাপাশি কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে এসব বৈঠকে। তিনি জানান, আমরা যৌথ উদ্যোগে ঢাকা, কিশোরগঞ্জ এবং পাবনায় হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার জন্য আইবিসিসিআই এর সাথে কাজ করছি এবং এই লক্ষ্যে কয়েকটি এমওইউ স্বাক্ষরের প্রত্যাশা করছি।
তিনি বলেন, ২ দিনের বৈঠকে ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের মধ্যে বিশেষ করে জ্বালানি খাতে, মানসম্পন্ন হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা, শিক্ষার্থী বিনিময় এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ খাত প্রতিষ্ঠায় এবং শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে বিশাল সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে।
সভাপতির বক্তব্যে আইবিসিসিআই সভাপতি ও নিটল-নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, বাংলাদেশে বাঁশের চিপস, পার শিলা এবং খনিজ পাথরের দ্রব্য খুব প্রয়োজন, যা উত্তর পূর্ব ভারত থেকে আমদানি করা যেতে পারে। ফেনী নদীর উপর মৈত্রী সেতু নির্মাণের ফলে আগরতলা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের দূরত্ব কমে এখন হয়েছে মাত্র ১১১ কিলোমিটার। ফলে ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে পণ্য পরিবহন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে আসন্ন মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর (ডিএসপি) যা জাপানের সহায়তায় নির্মিত হতে যাচ্ছে, তা একটি গেম চেঞ্জার হবে। এই গভীর সমুদ্র বন্দর (ডিএসপি) প্রবৃদ্ধি, সামুদ্রিক যোগাযোগ এবং বাণিজ্য বাড়াতে এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল ভেলু চেইনকে আরও শক্তিশালী করবে। তিনি আইবিসিসিআই-এর সাথে সহযোগিতা ও বন্ধুত্বের দীর্ঘ ইতিহাসের জন্য আইসিসিকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি তাদের এ মহতী প্রচেষ্টায় আইসিসি-এর সর্বোত্তম সফলতা কামনা করেন এবং কনক্লেভের উদ্দেশ্যগুলোকে অর্জন করতে আইবিসিসিআই থেকে পূর্ণ সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, এই কনক্লেভের মাধ্যমে বাংলাদেশের পেপার মিলের কাঁচামাল পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উপকৃত হতে পারে এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, চিকিৎসা প্রযুক্তি এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ অর্জন হবে।
অনুষ্ঠানে ইন্ডিয়ার দেসান হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সজল দত্ত্ব বলেন, বাংলাদেশে স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক উন্নয়নের জন্য এদেশে বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করতে চান। এতে এদেশে বসেই উন্নত বিশ্বের চিকিৎসা পাওয়া সম্ভব হবে। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইবিসিসিআই ভাইস প্রেসিডেন্ট শোয়েব চৌধুরী, দেসান হাসপাতালের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার সুরজিত ঘোষ । সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় পক্ষের অন্যান্য প্রতিনিধি এবং আইবিসিসিআই পরিচালকরা বক্তব্য রাখেন।এসময় বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
আর/এস/সরে