সুমন হাওলাদার,
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার আড়িয়ল ইউনিয়ন ভূমি অফিসে নামজারী করার নামে ১৫ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে অফিস সহকারী মনিরের বিরুদ্ধে। এর আগেও তিনি এক ব্যক্তির নিকট ১০হাজার টাকার চুক্তিতে নামজারী করে দিবেন বলে ৫হাজার টাকা নগদ হাতিয়ে নেয়। বাকি ৫হাজার টাকা না দেয়ায় সেই নামজারিটি নানান টালবাহানায় বাতিল করে দেয়। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে তোপের মুখে পরে টাকা ফেরত দেন মনির।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আড়িয়ল ইউনিয়ন ভূমি অফিসে টাকা ছাড়া কোনো কাজ করেন না এবং অর্থের বিনিময়ে জমির কাগজপত্র যাচাই-বাছাই ছাড়াই প্রতিবেদন তৈরি করেন। এছাড়া টাকা দিলে অফিসেই নামজারী আবেদন করা হয়, টাকা না দিলে হয়না আবেদন। অনলাইনে নামজারী আবেদন করতে নেয়া হয় ১হাজার টাকা। নামজারী আবেদন সহ নায়েবের কম্পিউটার ব্যবহার করছেন উম্মেদার শুভ নামের এক ব্যক্তি।
আড়িয়ল ইউনিয়ন ভূমি অফিস সহকারী মনির হোসেন সেবা নিতে আসা গ্রাহকদের কাছ থেকে বিভিন্ন কৌশলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। আর এসব কাজে প্রশ্রয় দেয় ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. সেলিম হোসেন। যেখানে নামজারি করতে সরকার নির্ধারিত ১ হাজার একশত টাকা নেয়ার কথা সেখানে ২০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে একটু বেশী দামের জমি হলেই আরো বেশি টাকা পর্যন্ত আদায় করে নিচ্ছে। এরপরও টাকা দিয়েও মিলছেনা কাঙ্খিত সেবা। আজ কাল পরশু করেই পার করে দিচ্ছেন মাসের পর মাস।
ধীপুর এলাকার বাসিন্দা হায়াতুল ইসলাম জানান, আমি নামজারী করতে গেলে হিন্দুদের সম্পদ ঐটা সেটা বলে নানান জটিলতার মধ্যে ফেলে। পরে আমাকে বলে ২০হাজার টাকা দিলে কোনো ঝামেলা ছাড়াই ১সপ্তাহের মধ্যে নামজারী করে দিবেন। দর কষাকষির মাধ্যমে নগদ ১৫হাজার টাকা দিয়ে কাগজপত্র জমা দিয়ে আসেন। কিন্তু দেই দিচ্ছি বলে প্রায় মাস পার হলেও নামজারী সম্পন্ন করা হয়নি। পরে তিনি একাধিক সংবাদকর্মীকে বিষয়টি জানান।
অভিযুক্ত মনির হোসেন বলেন, এইটা ‘খ’ তফসিলের জায়গা। কাজ হয়ে গেছে। নামজারী করতে ১৫হাজার টাকা লাগে কিনা? জানতে চাইলে তিনি বলেন সেটা নায়েব জানে। পার্টির সাথে এই বিষয়টা সমাধান করা হবে।
আড়িয়ল ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. সেলিম হোসেন টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমি পার্টির সাথে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন স্বেচ্ছায় টাকা দিয়েছে। তারপরেও যদি সে টাকা চায় তাহলে আসতে বইলেন, আমি সমাধান করে দিবো।
টঙ্গিবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, যে ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত, যার কাছ থেকে টাকা নেয়া হয়েছে তাকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করতে বলেন। অভিযোগ করলে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।