চট্টগ্রাম ব্যুরো
খাগড়াছড়িতে শিক্ষক সোহেল রানা হত্যার প্রতিবাদে ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে ষড়যন্ত্র বন্ধ করার দাবিতে ৫ অক্টোবর শনিবার চট্টগ্রামে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করা হয়। সকাল ১১.০০ টায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন হল (৩য় তলা) সিটি করপোরেশন ভবন, লাভ লেইন মোড়, নুর মোহাম্মদ সড়ক, চট্টগ্রামে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিকাল ৪.০০ ঘটিকায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব এ বিক্ষোভ মিছিল সহ মানববন্ধন কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও সন্ধা ৭.০০ ঘটিকায় মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত কর্মসূচীতে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটি সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন কায়েশ এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হাবীব আজমের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পিসিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান কাজী মুজিবর রহমান, প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন পিসিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও স্থায়ী কমিটির সদস্য শেখ আহমেদ রাজু, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক শাহজালাল, মহানগর পিসিএনপির সাধারন সম্পাদক অধ্যক্ষ এম এ আমিন, মহানগর পিসিএনপির নেতা কামরুল হাসান কাদের, পিসিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সি:সহ-সভাপতি আসিফ ইকবাল, সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল মাহমুদ, চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি গিয়াস উদ্দিন, চবি সাধারণ সম্পাদক ইমন, রাবিপ্রবি সভাপতি আলম, খাগড়াছড়ি সভাপতি সুমন আহম্মেদ, রাঙামাটি সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম, বান্দরবান জেলা সাধারণ সম্পাদক হাবিব আল মাহমুদ।
প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন,
খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক আবুল হাসান মুহাম্মদ সোহেল রানা।
তিনি বিগত সময়ে কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় চাকরিতে বহাল হন। কিন্তু, তাতে বাঁধা দিচ্ছিল সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়। ১অক্টোবর মঙ্গলবার তিনি রিলিজ অর্ডার নিতে বিদ্যালয়ে যান। সেখানে একই সময়ে ছাত্রী ধর্ষণ কতটুকু যৌক্তিক? পূর্বেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, কিন্তু তিনি আদালত কর্তৃক নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন। তাহলে মিথ্যা অভিযোগ এনে তাকে স্কুলের ভিতর নির্মম ভাবে হত্যা করলো কেন উপজাতি সন্ত্রাসীরা।
সারাদেশে মব কিলিং এ মারা যাওয়া কারোর অতীতে কতগুলা চুরি করলো সেটা উঠে আসে না, কতগুলা মামলা ছিলো সেটাও উঠে আসেনা। কিন্তু খাগড়াছড়িতে মব লিঞ্চিং এ মারা যাওয়া মামুনের অতীতের চুরির ঘটনা উঠে আসে, সোহেল রানার ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা উঠে আসে। সারাদেশে মব লিঞ্চিং থাকলেও, খাগড়াছড়িতে এসে অতীতের ঘটনা উঠিয়ে সেটা মৰ জাস্টিজই বানানো হচ্ছে কেন?
চোর, ধর্ষক, খুনি- অপরাধী যাই হোক প্রত্যেক অপরাধের বিচারের জন্য দেশের সুনির্দিষ্ট আইন রয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে এভাবে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার মাধ্যমে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে উপজাতি একটি কুচক্রী মহল সূক্ষ্মভাবে ষড়যন্ত্র করছে। এই ষড়যন্ত্রকে যদি রাষ্ট্র অবহেলা করে তবে সামনে পাহাড়ের সাধারণ মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাঙালিদের উপর একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ আর অপবাদের মাধ্যমে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড গুলো যার প্রমাণ বহন করে।
বক্তারা আরো বলেন,
মূলত পাহাড়ে নিজেদের কায়েমি স্বার্থ হাসিল করতেই চলমান অস্থিরতা তৈরিতে মূল উস্কানি দাতা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে ভূমিকা রাখছেন চাকমা সার্কেল চীফ দেবাশীষ রায় ও তার ২য় স্ত্রী ইয়ান ইয়ান, গৌতম দেওয়ান, মাইকেল চাকমা, প্রসীত বিকাশ খীসা, প্রফেসর মংসানু চৌধুরী, নিরূপা দেওয়ান,বাঞ্ছিতা চাকমা, প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, জুয়ামলিয়ান আমলাই, এডভোকেট সুষ্মিতা চাকমা, শান্তি বিজয় চাকমা, এডভোকেট মাধবী মারমা, অশোক কুমার চাকমা, ইমতিয়াজ মাহমুদ, মেজবাহ কামাল সহ আরো অনেকেই। পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে ষড়যন্ত্র ও সংঘাত বন্ধ করতে হলে রাষ্ট্রের উক্ত উস্কানিদাতাদের এখনি নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি, তারা যদি ষড়যন্ত্র ও উস্কানি দেওয়া বন্ধ না করে তাহলে অবিলম্বে তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে।
ষড়যন্ত্রকারীরা নেপথ্যে থেকে সংঘাত ও বৈষম্য বিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলন এর ব্যানারে জেএসএস এবং ইউপিডিএফ এর ছাত্র, যুব ও মহিলা সংগঠন তথা পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)’র ২য় ও ৩য় সারির নেতাকর্মীদের দিয়ে আন্দোলনের নামে পার্বত্য চট্টগ্রামে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। প্রতিটি আন্দোলনে আঞ্চলিক দলগুলির সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা জোরপূর্বক ভয়ভীতি প্রদর্শন করে সাধারণ পাহাড়িদের তাদের সাথে আন্দোলনে নামাতে বাধ্য করছে।