মোঃ হাসান মিয়া-বেড়া,সুজানগর,ও সাঁথিয়া প্রতিনিধিঃ
পাবনা দুলাই আজিম চৌধুরী জমিদার বাড়ি পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার দুলাই গ্রামে রয়েছে এক মুসলিম জমিদার বাড়ি।
ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে প্রায় ২৫০ বৎসরের পুরাতন এই জমিদার বাড়িটি।
এই জমিদার বাড়িটি,আজিম চৌধুরী জমিদার বাড়ি,নামেই বেশ পরিচিত।
সুজানগর উপজেলার দুলাই গ্রামে প্রায় ২৫০ বৎসর আগে এই জমিদার বাড়িটি প্রতিষ্ঠা করেন জমিদার রহিম উদ্দিন চৌধুরী।
তিনি ছিলেন সেই সময়ের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান।
তিনি জমিদার বাড়িটির প্রতিষ্ঠাতা হলেও বাড়িটি পরিচিতি পায় তার সন্তান আজিম চৌধুরীর নামে।
বর্তমানে এই জমিদার বাড়িটি আজিম চৌধুরীর জমিদার বাড়ি নামে পরিচিত।
জমিদার বাড়িটি আজিম চৌধুরীর নামে হওয়ার কারণ হল- তিনি যখন এই জমিদার বাড়ির জমিদারি পান তখনই এই জমিদার বাড়িটি ব্যাপক ভাবে বিস্তার লাভ করে এবং সকলের মাঝে পরিচিতি পায়।
জমিদার আজিম চৌধুরী চলে গেছেন কিন্তু রেখে গেছেন তার কর্মযজ্ঞের স্মৃতি ও নাম।
জমিদার আজিম চৌধুরীর ছিলেন সৌখিন এবং সৌন্দর্যের পূজারী।
আজ থেকে ২৫০ বছর আগে দুলাই’র মতো নিভৃত পল্লীতে প্রতিষ্ঠা করেন রাজপ্রাসাদতুল্য দ্বিতলবিশিষ্ট একাধিক দৃষ্টিনন্দন এবং বিলাসবহুল ভবন।
যে সময়ে কি না একটি একতলা ভবন নির্মাণ করা ছিল স্বপ্নের মতো।
শুধু কি দ্বিতল ভবন,সেটিও ছিল অত্যাধুনিক ডিজাইনের সঙ্গে কারুকার্য মন্ডিত। ভবনগুলো ছিল বহু কক্ষের। প্রতিটি কক্ষই ছিল বছু দরজা বিশিষ্ট। কক্ষ গুলোতে পর্যাপ্ত পরিমানে আলো-বাতাস প্রবেশের ব্যাবস্থা ছিল।
আজিম চৌধুরীর জমিদার বাড়ি বিখ্যাত হওয়ার প্রধান কারন এর আয়তন, ঐশ্বর্য এবং বিলাসবহুল ভবন। ১২০ বিঘা জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত আজিম চৌধুরীর জমিদার বাড়ি।
বাড়িটিতে ছিল ১১টি প্রধান নিরাপত্তা গেট। প্রথম গেটে সর্বদা দণ্ডায়মান থাকতো বিশাল আকৃতির দু’টি হাতি ও কামান ছিল।
হাতি দু’টি জমিদার বাড়ির নিরাপত্তা প্রহরীর কাজে ব্যবহৃত হত।
এছাড়াও জমিদার আজিম চৌধুরীর ভ্রমণ কাজে হাতি দু’টি ব্যবহূত হতো।
বাড়ির চারপাশ ঘিরে রয়েছে বিশাল নিরাপত্তা দীঘি।
এছাড়া বাড়ির অভ্যন্তরে একটি মসজিদ, জমিদার দরবারে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গোসলের জন্য একটি বিশাল পুকুর এবং জমিদার পরিবারের বিবিদের গোসলের জন্য অন্দরমহলের অভ্যন্তরে খনন করা হয়েছিল আরও একটি দর্শনীয় পুকুর।
এছড়াও ঐ বাড়িতে ছিল কাছারি ঘর, পাতিশাল-ঘোড়াশাল। সেইসাথে বাড়িটি ছিল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর।
জমিদার আজিম চৌধুরী তার জমিদারির সময় ৩টি নীল কুঠি স্থাপন করেন দুলাই গ্রামে।
গ্রামের কৃষকদের কৃষি কাজে উৎসাহিত করার জন্যই এই কুঠির স্থাপন করেন।
লোক মুখে জানা যায় তিনি অত্যন্ত আদর্শবান জমিদার ছিলেন। তার সুখ্যাতি ছিল গোটা বাংলা জুড়ে।