দেলোয়ার হোসেন
গত( ৬ই জুন ২০২৩) তুরাগ নদীর পাশে অজ্ঞাত একটি লাশ ভেসে থাকতে দেখে এলাকাবাসী ,হাত পা মুখমণ্ডল বাধা অবস্থায় লাশটি নদীতে বাসছিল খবরটি ছড়িয়ে পড়লে ভিকটিমের পিতা ফারুক হোসেন মুখো মন্ডল পরীধায়ের বস্ত্র দেখে নিখোঁজ হওয়া তার ছেলে শরিফ হোসেন রিফাতের লাশ শনাক্ত করে, পিতা মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে গাছা থানা একটি মামলা দায়ের করেন ৷ উক্ত নিশংস হত্যাকাণ্ডে এলাকার ব্যাপক চাঞ্চলের সৃষ্টি হয় ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদটি প্রচার করা হয় স্থানীয় লোকজন হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ মানববন্ধন সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন ৷ আইন-শৃঙ্খলার বাহিনী পাশাপাশি র্র্যাব এক ঘটনায় ছায়া তদন্ত শুরু করেন ৷ এরই ধারাবাহিকতায় গত (১১ ই জুন) রোজ রবিবার র্র্যাব ত্রক ত্রর একটি আভিজানিক দল ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে শরিফ হোসেন (রিফাত) হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী প্রধান আসামি নিহতের বন্ধু তাইজুল ইসলাম কাজলকে গ্রেফতার করেন ৷ গ্রেফতারকৃত আসামি কাজলের হেফাজত হইতে একটি মোবাইল উদ্ধার করা হয় ৷গ্রেফতারকৃত আসামি তাজুল ইসলামের প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী উক্ত মামলার ঘটনায় জড়িত অপর আসামি নৌকার মাঝি এমারত হোসেন পিতা মইনুদ্দিন গাছা থানা একই দিনে গ্রেফতার করেন গ্রেফতারকৃত আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসা বাদে রিফাত হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে ,হত্যার লোম হর্ষক ঘটনার বর্ণনা দেয় ৷ গ্রেফতারকৃত আসামি তাজুল ইসলাম কাজল র্র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসা বাদে জানা যায় যে, ভিকটিম রিফাত তার পূর্ব পরিচিত এবং তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল ৷ আনুমানিক একমাস পূর্ব হইতে তাদের মধ্যে ব্যবসায়িক লেনদেন পাওনা নিয়ে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয় এবং আসামির ভাষ্যমতে নিহত রিফাত আসামির পাওনা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায় ৷ এতে আসামি কাজলের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং রিফাতকে হত্যার পরিকল্পনা করে৷ পরিকল্পনামাফিক গত( ৫ই জুন) আসামি কাজল তার অপর সহযোগী সোহাগ এর সহায়তায় ভিকটিম রিফাতকে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে তার বাসা হইতে ডেকে এনে তুরাগ নদী পার হয়ে তারা হাতাশকান্দি চরে যায় এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী সন্ধ্যা অবধি অপেক্ষা করে ৷ পরবর্তীতে রাত আনুমানিক সাড়ে আট ঘটিকায় সময় নদীর অপর পাশ থেকে বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে ৷ ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে পুনরায় তাদের মধ্যে তর্ক তর্কবিতর্কের এক পর্যায় আসামি কাজল ও সোহাগ দুইজনই ভিকটিমকে কিল ঘুসি মেরে নদীর পাড়ে মাটিতে ফেলে দেয় ৷ আসামি কাজল জালের রশি দিয়ে ভিকটিমের হাত পা বেঁধে ফেলে ৷ আঘাতের ফলে ভিকটিম গোঙ্গাতে থাকে৷ খেয়া ঘাটের অপর প্রান্তে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আগের থেকে ঠিক করা নৌকার মাঝি এমারত হোসেনকে ডাক দিয়ে এপারে নিয়ে আস ৷ আসামি কাজল ও সোহাগ ভিকটিম রিফাতকে টেনে হেঁচড়ে ধরাধরি করে নৌকায় উঠায় ৷ নৌকা মাঝ নদীতে আসলে আসামি কাজল ও সোহাগ ভিকটিম রিফাত এর গায়ে টি-শার্ট ও স্যান্ডো গেঞ্জি খুলে হাত পা বেঁধে বেঁধে ফেলে এবং গুম করার উদ্দেশ্যে ভিকটিমকে হাত পাও বাধা অবস্থায় মাঝ নদীতে ফেলে দেয় ৷ পরবর্তীতে ভিকটিম পানিতে ডুবে মারা গেলে মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে তারা সেখান থেকে দ্রুত চলে আসে ৷ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার ভয় ভিকটিমের রেখে যাওয়া মোটরসাইকেল রেখে পায়ে হেঁটে কিছুদূর এসে ইজিবাইকে করে আসামিরা যার যার বাড়িতে চলে যায় ৷ নিহত শরীফের পরিবার খোঁজাখুঁজি শুরু করলে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চলের সৃষ্টি হয় কানাঘুষা শুনে আসামিরা বাড়ি থেকে আত্মগোপনে চলে যায় ৷ দ্রুত আসামী কাজলের বিরুদ্ধে গাজীপুর কোটে বিভিন্ন থানা একাধিক মামলা আদালতে বিচারাধীন আছে মর্মে জানা যায় গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন