এসএম রুবেল
রমজানের রোজা রাখা ফরজ। আল্লাহ তাআলা রমজান মাসজুড়ে রোজা রাখাকে ফরজ করেছেন। রোজা রেখে যেসব কাজ করলে রোজা ভেঙে যায় এবং গুনাহের কারণ হয় তা অনেকের অজানা। রোজা ভঙ্গের সেসব কারণ ও গুনাহের কাজগুলো কি শিক্ষা দিয়েছেন আমাদের দয়ার নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম রোজা ভঙ্গের মৌলিক নীতিমালা উল্লেখ করেছেন। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে তা পরিপূর্ণভাবে উল্লেখ করেছেন। এখানে রোজা ভঙ্গের কারণগুলো উল্লেখ করা হলো প্রথম কারণ,স্ত্রী সহবাস করা,সহবাস বলতে বুঝায়,পুরুষের লিঙ্গ নারীর জননেন্দ্রিয়ে প্রবেশ করানো। এটা রোজা ভঙ্গের বড় কারণ এবং রোজা অবস্থায় সবচেয়ে বড় গুনাহের কাজ। সুতরাং যে রোজা অবস্থায় স্ত্রী সহবাস করল তার রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। চাই তা ফরয হোক কিংবা নফল।এই অবস্থায় রোজা ভঙ্গের ফলে ৫টি জিনিস সংঘটিত হয়১/কবিরা গুনাহ হয়,আর এর ফলে তাকে তওবা করতে হবে।২/রোজা বাতিল হয়ে যাবে ৩/তাকে ঐ দিনের অবশিষ্ট অংশ পানাহার ইত্যাদি থেকে বিরত থাকতে হবে ৪/ঐ দিনের রোজা রমজানের পরে ক্বাযা করতে হবে ৫/বৃহৎ কাফ্ফারা আদায় করতে হবে,আর কাফ্ফারা হলো শরিয়ি ওজর ছাড়া একাধারে দুই মাস রোজা রাখা অথবা একজন গোলাম আজাদ করা কিংবা ৬০ জন মিসকিনকে একবেলা খাবার খাওয়ানো।
দ্বিতীয় কারণ,ইচ্ছাকৃত বীর্যপাত ঘটানো,চাই তা চুম্বন,স্পর্শ বা হস্তমৈথুন অথবা কামভাবসহ এমন কিছু করার মাধ্যমে হোক যা বীর্যপাত ঘটায়,এমন হলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। কারণ এগুলো এমনসব কাজ যেগুলো পরিত্যাগ করা ছাড়া রোজা সংঘটিত হতে পারে না। তৃতীয় কারণ যে ব্যক্তির অনিচ্ছাকৃত বমি হলো,তার ওপর কোনো কাজা নেই। তবে যে ইচ্ছাকৃত বমি করল,সে যেন কাজা করে নেয়।ইচ্ছাকৃত বমি করলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। চাই পেট চেপে বমি করুক,কিংবা কণ্ঠনালীতে কিছু প্রবেশ করিয়ে বমি করুক কিংবা এমন বস্তুর ঘ্রাণ নিল,যাতে বমি আসে,অথবা এমন বস্তুর দিকে ইচ্ছে করে নজর দিল যার কারণে বমি হয়। এসব কারণে রোজা ভেঙ্গে যাবে।
সপ্তম কারণ,হায়েয তথা ঋতু বা নেফাস তথা সন্তান প্রসবের রক্ত বের হওয়া জছাড়া সব মুসলমানের ওপর জুমার নামাজ জামাতে আদায় করা অপরিহার্য কর্তব্য।পবিত্র জুমার দিনের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে আরও উল্লেখ রয়েছে যে,হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,যে কোনো মুসলমান জুমার দিনে কিংবা জুমার রাতে মৃত্যুবরণ করে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা তাকে কবরের ফিতনা হতে নিরাপদ রাখেন।জুমার গুরুত্ব এতই ব্যাপক যে, কোরআন শরিফের একটি সুরার নামই রাখা হয়েছে সুরা জুমা,এ থেকে বুঝা যায়,আল্লাহ তাআলা জুমাকে কত গুরুত্ব দিয়েছেন। তাই যখন জুমার নামাজের জন্য আহ্বান করা হয় তখন আমাদের উচিত হবে,সব কাজকর্ম ও ব্যবসা বণিজ্য গুটিয়ে মসজিদের দিকে রওয়ানা হয়ে যাওয়া। মসজিদে গিয়ে মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনা।
এছাড়া জুমার দিন আল্লাহ তাআলা মুমিনের পুণ্যের প্রতিদান কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেন। এজন্য জুমার দিন জুমার নামাজ ছাড়াও যথাসম্ভব সকল প্রকার পুণ্য কাজ করতে হবে। পবিত্র মাহে রমজানের রহমতের দশকের জুমার দিনের ফজিলত উপলব্ধি করে সে অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা জরুরি।রমজানের ফজিলত ও করণীয় তাকওয়ার মাস রমজান। কোরআন নাজিলের মাস রমজান। রমজানে একটি ফরজ এক মাস রোজা রাখা দুটি ওয়াজিব সদকাতুল ফিতর প্রদান করা ও ঈদের নামাজ আদায় করা পাঁচটি সুন্নত-সেহরি খাওয়া,ইফতার করা,তারাবিহ পড়া,কোরআন করিম তেলাওয়াত করা ও ইতেকাফ করা।
পবিত্র রমজান মাসের প্রথম ১০ দিন রহমত,মধ্য ১০ দিন মাগফেরাত এবং শেষ দিনগুলো জাহান্নাম থেকে মুক্তির। অন্যান্য মাস অপেক্ষা রমজান মাসের শ্রেষ্ঠত্বের বড় কারণ এ মাসেই বিশ্বমানবতার মুক্তি সনদ পবিত্র আল-কোরআন নাজিল হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক বলেছেন,রমজান সেই মাস যে মাসে কোরআন নাজিল হয়েছে। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে কেউ এ মাসটি পাবে সে এ মাসের রোজা রাখবে।
এ মাসেই এমন একটি রাত রয়েছে যাকে বলা হয় লাইলাতুল কদর বা সৌভাগ্য রজনী। হজরত উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন,নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনটি আমল জীবনে কখনো ছাড়েননি। সেগুলো হলো-তাহাজ্জুদ নামাজ,আইয়ামে বিজের রোজা এবং রমজান মাসের ইতেকাফ। তিনি প্রতিবছর ১০দিন ইতেকাফ করতেন আর জীবনের শেষ বছর ২০ দিন ইতেকাফ করেছেন।
রমজান মাস। আরবি মাসসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বরকতময় ও মর্যাদাপূর্ণ মাস। দীর্ঘ দুটি মাসের নিরন্তর দোয়া ও প্রার্থনা ছিল,হে আল্লাহ,রজব ও শাবান মাস আমাদের জন্য বরকতময় করুন এবং রমজান আমাদের নসিব করুন,এই দোয়া কবুল হলো,এ বছর তা আমাদের জন্য বাস্তবে পরিণত হলো।
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,যখন রমজান মাস আসে তখন বেহেশতের দরজা খুলে দেওয়া হয় দোজখের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয় শয়তানকে শৃঙ্খলিত করা হয়।
রোজার প্রতিদান।বুখারি শরিফে বর্ণিত হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা রাখবে তার অতীতের গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হবে।
হজরত আবদুল্লাহ্ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,সিয়াম এবং কোরআন হাশরের ময়দানে বান্দা-বান্দীর জন্য সুপারিশ করবে এবং আল্লাহ তাআলা তঁদের উভয়ের সুপারিশ কবুল করবেন।হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু আরও বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বর্ণনা করেন,প্রত্যেক বস্তুর জাকাত রয়েছে তেমনি শরীরেরও জাকাত আছে আর শরীরের জাকাত হচ্ছে রোজা পালন করা। অর্থাৎ জাকাতদানে যেভাবে মালের পবিত্রতা অর্জন হয় তেমনি রোজা পালনের মাধ্যমে শরীর পবিত্র হয় গুনাহ মুক্ত হয়।
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,মানুষের প্রত্যেক আমলের সওয়াব দশ গুণ হতে সাত শত গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। হাদিসে কুদসিতে আছে,আল্লাহ তাআলা বলেন-রোজা এ নিয়মের ব্যতিক্রম কেননা তা বিশেষভাবে আমার জন্য আমি স্বয়ং তার প্রতিদান দেব বান্দা তার পানাহার ও কামনা,বাসনাকে আমার সন্তুষ্টির জন্য ত্যাগ করেছে।
তারাবিহ নামাজ
এশার নামাজের ফরজ ও সুন্নতের পর বিতরের আগে দুই রাকাত করে মোট ২০ রাকাত নামাজ আদায় করা সুন্নত। সম্ভব হলে খতম তারাবি আদায় করবে।রোজাদারের জন্য জান্নাতের বিশেষ দরজা হজরত সাহল বিন সাদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন জান্নাতের আটটি দরজা রয়েছে। এর মধ্যে একটি দরজার নাম রাইয়ান। এ দরজা দিয়ে শুধু রোজাদারগণ প্রবেশ করবে। অন্যরাও এই দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে চাইবে। কিন্তু রোজাদার ছাড়া অন্য কাউকে এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ রয়েছে একটি তার ইফতারের সময় অপরটি হলো আল্লাহ তাআলার দিদার বা সাক্ষাতের সময়।
হাদিসে আরও উল্লেখ রয়েছে ইফতারের সময় দোয়া কবুলের সময়। আল্লাহ তাআলা বান্দার দোয়া কবুল করেন। আর এই সময়ের দোয়া হচ্ছে-আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাবিরাহমাতিকাল্লাতি ওয়াসিয়াত কুল্লা শাইয়িন আনতাগফিরা লিজুনুবি।
লাইলাতুল কদর
লাইলাতুল কদর হচ্ছে একমনে একটি রাত যে রাতে জেগে ইবাদত-বন্দেগি করলে এক হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও উত্তম বলে পবিত্র কোরআনে উল্লেখ রয়েছে। এক হাজার মাসের হিসাব করলে কদরের এক রাতের ইবাদত ৮৬ বছর ৪ মাসের সমান। কিন্তু আল্লাহ তাআলা তার চেয়েও বেশি বা উত্তম বলেছেন।যে ব্যক্তি কদরের রাতে সওয়ারের আশায় ইবাদত করবে তার অতীতের গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হবে। উম্মুল মুমিনিন হজরত আয়শা সিদ্দিকা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন,ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি যদি কদরের রাত পাই তাহলে আমি কী দোয়া পড়ব? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুওউন তুহিব্বুল আফওয়া ফাফুআন্নি,এই দোয়া পড়বে।
হাদিসে আছে তোমরা রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতে ২১,২৩,২৫, ২৭ ও ২৯ তারিখ,শবে কদর তালাশ করবে।ইতিকাফ,আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,ওয়া আনতুম আকিফুনা ফিল মাসজিদ’তোমরা মসজিদে ইতেকাফ করো। ইতেকাফ শব্দের অর্থ নিজেকে আবদ্ধ রাখা,শরিয়তের পরিভাষায় ইতেকাফ হলো-মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভের আশায় শর্ত সাপেক্ষে নিয়তসহকারে পুরুষেরা মসজিদে ও নারীরা ঘরের নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করা।
রমজানের শেষ দশক (২০ রমজান সূর্যাস্তের পূর্ব থেকে শাওয়াল মাসের চঁদ দেখা পর্যন্ত ইতেকাফ করা সুন্নতে মুয়াক্কাদায়ে কিফায়া। বিনা প্রয়োজনে অর্থাৎ গোসল,খাবার,প্রস্রাব-পায়খানা ছাড়া অন্য কোনো অজুহাতে ইতেকাফের স্থান ত্যাগ করতে পারবে না। ইতেকাফ অবস্থায় কোরআন তেলাওয়াত জিকির নফল নামাজ ইত্যাদিতে মশগুল থাকবে।প্রকৃতপক্ষে রমজান হলো আগের সব গুনাহের জন্য ক্ষমা চেয়ে সাচ্চা মুসলমান হয়ে জীবনযাপনের প্রতিজ্ঞা করার মাস। এ মাসের সময়গুলো খুব বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করা উচিত।
তাকওয়া অর্জনের মাস
রমজান তাকওয়া অর্জনের মাস। আর সিয়াম সাধনা বা রোজা পালন তাকওয়া অর্জনের অনন্য সোপান। রমজানে মাসব্যাপী রোজা পালন ফরজ করার তাৎপর্য এখানেই নিহিত। আল্লাহ তাআলা বলেন হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্য রোজা ফরজ করা হলো যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের জন্য ফরজ করা হয়েছিল,যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।
সদকাতুল ফিতর,সদকাতুল ফিতর রমজান মাসে দিতে হয় এমন একটি অনুদান। যাতে মুসলিম সমাজের অভাবী ব্যক্তিরাও যেন স্বাচ্ছন্দে ঈদ উদযাপন করতে পারে। ঈদের নামাজের আগেই এই সদকা আদায় করতে হয়। সাহাবায়ে কেরাম ঈদের বেশ কয়েক দিন আগে অভাবীদের কাছে এ সদকা পৌঁছে দিতেন। যাতে তারা ঈদের জামা-কাপড় এবং বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী কেনাকাটা করে খুশি মনে ঈদ উদযাপন করতে পারে।
রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করুন রমজানে ইবাদতের পরিবেশ বজায় রাখুন। রমজানের ফরজ,ওয়াজিব ও সুন্নাতগুলো পালন করুন। নিজে নেক আমল করুন,অন্যদেরও নেক আমলের প্রতি উদ্বুদ্ধ ও সহায়তা করুন। দুনিয়ার খুশি ও পরকালের মুক্তি নিশ্চিত করুন। রমজানের রোজা পালন ও ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ এবং রোষ থেকে নিষ্কৃতি ও বালা-মসিবত থেকে মুক্তির চেষ্টা করুন। হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ তাআলা বলেন-রোজা আমারই জন্য আমিই এর বিনিময় প্রতিদান দেব।
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,রমজান মাসের প্রথম ১০ দিন হলো রহমত,দ্বিতীয় ১০ দিন মাগফেরাত এবং শেষ ১০ দিন হলো নাজাত। সাধারণভাবে বলা হয়ে থাকে প্রথম ১০ দিন আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের প্রতি রহমত বা দয়া বণ্টন ও বিতরণ করতে থাকবেন। দ্বিতীয় ১০ দিন আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের ক্ষমা করতে থাকবেন। শেষ ১০ দিন আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের জাহান্নাম থেকে নাজাত বা মুক্তি দিতে থাকবেন।
সহমর্মিতার প্রধান ক্ষেত্র হচ্ছে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল ও ক্রেতা-ভোক্তাসাধারণের হাতের নাগালে রাখা। খাদ্যে ভেজাল না মেশানো এবং ওজনে কমবেশি না করা। ইসলাম শুধু অনুষ্ঠান সর্বস্ব ধর্ম নয় এর মূল বাণীই হচ্ছে মানবতার উৎকর্ষ।আল্লাহ ও রাসুলের আনুগত্য আর মানুষসহ সকল সৃষ্টির প্রতি সহানুভূতি ও ভালোবাসা। পবিত্র রমজানে মুসলমানের জীবন-জীবিকার সর্বত্র সততা সংযম ও পবিত্রতার ছোঁয়া লাগবে এটাই কাম্য। রমজানুল মুবারকের সিয়াম সাধনার এখানেই সার্থকতা।
রোজাদারের মর্যাদা
হজরত সাহল রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, জান্নাতের মধ্যে রাইয়্যান নামক একটি দরজা রয়েছে। কেয়ামতের দিন এ দরজা দিয়ে শুধুমাত্র রোজাদাররাই প্রবেশ করবে। তাদের ব্যতিত এ দরজা দিয়ে অন্য কাউকে (জান্নাতে) প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। ঘোষণা দেয়া হবে- রোজাদাররা কোথায়? তখন তারা (সব রোজাদার) দাঁড়াবে। তাদের ছাড়া আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। রোজাদাদের প্রবেশের পরপরই (রাইয়্যান নামক) দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে। যাতে এ দরজা দিয়ে আর কেউ প্রবেশ করনে না পারে।
এ বিশেষ মর্যাদা পেতে রোজাদারকে রমজানের হক যথাযথভাবে আদায় করতে হবে। প্রথম দশক তথা রহমতের দশকে রোজার হকগুলো আদায় করতে ব্যর্থ হলে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দশকও ব্যর্থতায় পরিণত হবে। তাই রহমতের দশক থেকেই রমজানের হক যথাযথভাব।।