
জুনায়েদ কামাল, স্টাফ রিপোর্টার:
মাহবুব আলমগীর আলোকে আহ্বায়ক এবং হারুনুর রশীদ আজাদকে সদস্যসচিব করে নোয়াখালী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। ৫ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটিতে অ্যাডভোকেট এবিএম জাকারিয়াকে যুগ্ম আহবায়ক এবং এজেডএম গোলাম হায়দার বিএসসি ও অ্যাডভোকেট আবদুর রহমানকে সদস্য করা হয়েছে।
রোববার (০২ ফেব্রুয়ারি) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে গত কয়েকদিন থেকে নোয়াখালী জেলা বিএনপির কমিটি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছিল।কে হচ্ছেন নোয়াখালী জেলা বিএনপির কান্ডারি? কত সদস্যের কমিটি হবে? আহ্বায়ক কমিটি হলে, কে হবেন আহ্বায়ক? কে হবেন যুগ্ম আহ্বায়ক কিংবা সদস্যসচিব? এমন নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নোয়াখালী জেলা বিএনপির সর্বশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছিল ২০১৭ সালের মে মাসে। তখন সভাপতির দায়িত্ব পান এজেডএম গোলাম হায়দার বিএসসি। আর সাধারণ সম্পাদক করা হয় অ্যাডভোকেট আবদুর রহমানকে। ওই কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে গঠনের দুই বছরের মাথায়। এরপর পেরিয়ে গেছে দীর্ঘ প্রায় ছয় বছর। আন্দোলন-সংগ্রামের কারণে কমিটি পুনর্গঠন নিয়েও তেমন আলোচনা ছিল না। কিন্তু গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জেলা বিএনপির নতুন কমিটি গঠন নিয়ে শুরু হয় নানা আলোচনা। দলের দায়িত্ব পেতে আগ্রহী জ্যেষ্ঠ নেতারাও কেন্দ্রের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে দেন। পাশাপাশি নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা কাছের লোকজনের মাধ্যমেও দলে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরার চেষ্টা অব্যাহত রাখেন।
নব ঘোষিত আহবায়ক কমিটির আহবায়ক মাহবুব আলমগীর আলো তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে ত্যাগের তুলনায় প্রাপ্তির হিসাব ছিল কম। ঢাকায় কেন্দ্রীয় বিএনপির রাজনীতি থেকে সরে এসে তিনি নিজ জেলা নোয়াখালীর রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। ১৯৭৭ সালে স্কুলের ছাত্র থাকা অবস্থায় শহীদ রাস্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাঁ/ না ভোটের সময় থেকেই ছাত্রদলের সাথে যুক্ত হন তিনি। এরপর কলেজে পড়াকালীন তিনি সোনাপুর কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। নোয়াখালী জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক ছিলেন এবং সে সময় নোয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে ভিপি ইলেকশন করেন। জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক থাকা অবস্থায় ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সদস্য ছিলেন (দুদু-রিপন পরিষদ)। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের (জালাল বাবলু পরিষদ) সহ সম্পাদক ছিলেন। এরপর ডাকসুর ভিপি আমান উল্লাহ আমানের সাথে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ১১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটির ৮ নং সদস্য হন এবং পূর্ণাঙ্গ কমিটির সহসভাপতি ছিলেন। কেন্দ্রীয় যুবদলের (আব্বাস- গয়েশ্বর) কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। এরপর যুবদলে কেন্দ্রীয় কমিটির (বুলু- আলাল) কমিটির বিশেষ সম্পাদক হন। নোয়াখালী জেলা যুবদলের সভাপতি ছিলেন। সুধারাম থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
অপরদিকে সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া হারুনুর রশীদ আজাদের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে রয়েছে অনেক সাফল্যের স্মৃতি। জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। সেই থেকে তার রাজনৈতিক জীবনের উত্থান, একাধারে তিনি কয়েকবার নোয়াখালী পৌরসভা বিএনপির সভাপতি দায়িত্ব পালন করেন। এরপর নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা এই নেতা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। জননন্দিত নেতা হিসেবে তিনি দুই দুইবার মেয়র নির্বাচিত হন।
কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক করা হয় নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সুবর্ণচর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ বি এম জাকারিয়াকে।