
মোজাহের ইসলাম নাঈম
ব্যুরো চীফ নোয়াখালী।
নোয়াখালী সদর উপজেলার ৭ নং ধর্মপুর ইউনিয়নে চর দরবেশ গ্রামে গৃহহীনদের জন্য নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধিকাংশ ঘর লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।শুরুতে ঘর গুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সচ্ছল ব্যক্তিদের নামে সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে কিন্তু সচ্ছল ব্যক্তিরা ঐ সব ঘরে বসবাস না করে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিক্রি করছেন ঘর গুলো।
প্রতিটি ঘর ১ লাখ থেকে ১লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবার কেউ ভাড়া দিয়ে রাখছেন অন্য পরিবারের কাছে। তবে কিছু ঘর বিক্রি হয়েছে একাধিকবার।সদর উপজেলার ৭নং ধর্মপুর ইউনিয়ন ৯ নং ওয়ার্ড চর দরবেশ আশ্রয়ণ প্রকল্প ঘুরে বসবাসকারীদের সাথে আলাপকালে এসব তথ্য জানা গেছে।
একই চিত্র অন্যান্য ইউনিয়নের আশ্রয়ণ প্রকল্পেও পাওয়া গেছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস ও ভূমি অফিসের কর্তাদের ম্যানেজ করেই সরকারি ঘর বেচাকেনার মহোৎসব চলছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ৪ ব্যক্তি।তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেন তারা। এছাড়া ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়,গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে পুর্নবাসনের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায়।
নির্মাণ কাজের মধ্যেই ঘর বরাদ্দের জন্য ভূমি ও গৃহহীনদের আবেদন নেওয়া হবে।আবেদন যাচাই বাছাই শেষে ধাপে ধাপে তাদের মাঝে ঘর গুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণপ্রকল্প-২ এর আওতায় সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের চর দরবেশ গ্রামে ২ একর ৪৬ শতাংশ সরকারি খাসজমিতে প্রতিটি ঘরের সামনে ১০ ফুট, পাশে ৬ ফুট ও পেছনে ৮ ফুট জায়গা রেখে ৮০টি ঘর নির্মাণের কাজ হাতে নেওয়া হয়। প্রতিটি ঘর নির্মাণের জন্য ২ লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা বরাদ্দ করা হয়।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের আশেপাশে যারা ভূমিহীন রয়েছে তাদের ঘর বরাদ্দ না দিয়ে দূর-দূরান্তের স্বাবলম্বী পরিবারদের কাছে টাকার বিনিময়ে সরকারের মহতি উদ্যোগের এসব ঘর বরাদ্দ দিচ্ছেন তারা। ভূমিহীন নয় এমন অনেকেই টাকার বিনিময়ে বাড়ি বরাদ্দ পেয়েছেন।
কেউ কেউ আবার বাড়ি বরাদ্দ নিয়ে বাড়তি দামে অন্যের কাছে বিক্রি করেছেন,সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে অনেক ঘরে তালা ঝুলানো,এদের মধ্যে রয়েছে, নিলুফা ৬৬ নং ঘর ,মনির ০৯ ঘর ,নুরজাহান ১১ নাং ঘর,শাহিনা আক্তার ৪৫ নাং ঘর ,শাহাবুদ্দিন ৩৪নং ঘর ,বনি ৭৩ নং ঘর ,বকুল ৭৬,বিমল চন্দ্র শীল ৪১,আব্দুর রহিম ১৭,আমির হোসেন ১৯,এছাড়াও আরো অনেক ঘর রয়েছে।
এলাকাবাসী ও প্রকল্পের স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন ঘর বিক্রি করার অনুমতি আব্দুল ওয়াহাব থেকে নিতে হয় অনুমতি নিতে ওয়াপকে ২০ হাজার টাকা করে দিতে হয় ২০ হাজার টাকা না দিলে তার ঘর বিক্রি করতে দেয় না আব্দুল ওয়াহাব ধর্মপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের সভাপতি আবদুল ওহাব বলেন,৮০টি ঘরের মধ্যে ২০ টি ঘর ইতিমধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে।’
উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার
বলেন,ভূমিহীন ও গৃহহীন যাচাই-বাছাই করার জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বরাদ্দের টাস্কফোর্স নামে একটি কমিটি ছিল। ওই কমিটির সভাপতি ছিলেন ইউএনও এবং সদস্যসচিব ছিলেন এসি ল্যান্ড স্যার। ওনাদের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী আমরা ভূমি ও ঘর বন্দোবস্ত নথি রুজু করে ইউএনও স্যারের কাছে প্রেরণ করি।’
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও)
বলেন,আশ্রয়ণের ঘরগুলো নির্মাণের দায়িত্ব ছিল আমাদের। কিন্তু তালিকা যাচাই-বাছাই করেছেন এসি ল্যান্ড ও ইউএনও স্যারের। ওনারাই বিষয়টি ভালো বলতে পারবেন।’
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)বলেন, সরকারি ঘর বিক্রি করার কোনো সুযোগ নেই। যারা এগুলো করছে,তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আখিঁনুর জাহান নিলা বলেন,আমি নতুন যোগদান করেছি। বিভিন্ন মাধ্যমে এগুলো শুনছি। আমি দু-এক দিনের মধ্যে সরেজমিনে পরিদর্শন করব।’