
সাদ্দাম হোসেন স্টাফ রিপোর্টার।
অপারেশন ‘ডেভিল হান্টের’ তৃতীয় দিনে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় যৌথ বাহিনীর গাড়িতে ককটেল হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় ধাওয়া-পালটা ধাওয়া ও গুলিবর্ষণের ঘটনাও ঘটে। যৌথ বাহিনী আত্মরক্ষার্থে ২৪ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাত ২টার দিকে উপজেলার চরকিং ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাশার মার্কেট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। যৌথ বাহিনী তাৎক্ষণিক দুইজনকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- হাতিয়া উপজেলার চরকিং ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মৃত নুরুল হকের ছেলে মো. নবীর উদ্দিন (৫০) ও হাজী আব্দুল মতিনের ছেলে মো. ইমাম হোসেন (৫০)
যৌথ বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাত ১১টার দিকে যৌথ বাহিনী খবর পায় বাশার মার্কেট এলাকার কাউছার মিয়ার ব্রিকফিল্ডের সামনের মাঠে সন্ত্রাসীরা অবস্থান করছে। তাৎক্ষণিক নৌবাহিনী কন্টিনজেন্টের কমান্ডার আফসার আহমেদের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় ব্রিকফিল্ডের সামনের মাঠ থেকে সন্ত্রাসীরা যৌথ বাহিনীর গাড়িতে ককটেল নিক্ষেপ করে। আত্মরক্ষার্থে তৎক্ষণাৎ যৌথ বাহিনী প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং মোট ২৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে সন্ত্রাসীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীদের ধাওয়া করা হলে আনুমানিক ১০ থেকে ১৫ জন পালিয়ে যায়। তবে ঘটনাস্থল থেকে যৌথ বাহিনী মো. নবীর উদ্দিন ও মো. ইমাম হোসেন নামের দুই চিহ্নিত সন্ত্রাসীকে অস্ত্রসহ আটক করতে সক্ষম হয়।
এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল (ম্যাগাজিন ও এক রাউন্ড গুলিসহ), তিনটি একনলা দেশীয় বন্দুক, আটটি কার্তুজ, ২০টি ককটেল, দুইটি ডেগার, তিনটি ক্রিজ ও একটি তলোয়ার উদ্ধার করা হয়। যৌথ এ অভিযানে নৌবাহিনীর সঙ্গে কোস্ট গার্ড ও পুলিশ অংশগ্রহণ করে।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে নৌবাহিনী কন্টিনজেন্টের কমান্ডার আফসার আহমেদ হাতিয়া থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, গত ৮ ফেব্রুয়ারি হতে সারা দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি প্রতিরোধে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। এই অভিযানের অংশ হিসেবে হাতিয়া উপজেলায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড ও পুলিশের সমন্বয়ে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে আমরা হাতিয়ার উল্লেখযোগ্য চিহ্নিত সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার ও অস্ত্র জব্দ করতে সক্ষম হয়েছি। গতরাতে আমাদের ওপর হামলা করা হলে আমরা আত্মরক্ষার্থে ফাঁকা গুলি ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিই। পরবর্তীতে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্রসহ দুই সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করি।
আফসার আহমেদ আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, মাদক ও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে তারা সাধারণ জনগণের ওপর হামলায় প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে। বর্তমান সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ এর আওতায় অপারেশন ডেভিল হান্টের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর দায়িত্বপূর্ণ এলাকাসমূহে ভবিষ্যতে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে