

দেলোয়ার হোসেন
গত (২৫ মে ২০২৩) নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে স্থানীয় জনগণ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপর হামলা, গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ ২০-২৫ জন গুরুতর আহত হয়। উক্ত ঘটনায় রূপগঞ্জ থানা পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা ও অন্য আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়। উক্ত ঘটনা ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এ প্রেক্ষিতে অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার সহায়তায়, র্যাব-১১ ও র্যাব-১৩ এর যৌথ অভিযানে গত রাতে কুড়িগ্রামের ভ‚রুঙ্গামারী এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ এলাকার মোশা বাহিনীর প্রধান মূলহোতা ও শীর্ষ সন্ত্রাসী ১। মোশারফ হোসেন ভ‚ঁইয়া @মোশা (৪৭), পিতাঃ হাজি মোতালেব ভ‚ইয়া, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ২। দেলোয়ার হোসেন (৫২), পিতাঃ মৃত ছালেম, রূপগঞ্জ, থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃতদের তথ্যের ভিত্তিতে অদ্য ভোরে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের নাওড়া এলাকা থেকে একটি বিদেশী পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃতরা দীর্ঘদিন যাবৎ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ও তার পাশর্^বর্তী এলাকায় হত্যা, হত্যা চেষ্টা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, প্রতারণা, জমি দখল, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। উক্ত দলের সদস্য সংখ্যা ৭০-৮০ জন। মোশারফ এর নেতৃত্বে এই সন্ত্রাসী দলের সদস্যরা এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, অবৈধভাবে জমি দখল, হুমকি, ছিনতাই ও মাদক ব্যবসাসহ অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করত। কেউ চাঁদা দিতে রাজি না হলে মোশা বাহিনীর সন্ত্রাসীরা বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করত। অবৈধভাবে জমি দখল, চাঁদাবাজি ও অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তারা দেশী ও বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করত। এছাড়াও এলাকার সাধারণ জনগণ মোশা বাহিনীর সন্ত্রাসীদের জন্য সবসময় আতঙ্কে থাকত। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যা, হত্যাচেষ্টা, চাঁদাবাজি, অবৈধ অস্ত্র, প্রতারণা ও মাদকসহ বিভিন্ন মামলার তথ্য পাওয়া যায়।
গত ২৫ মে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার নাওড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সহিংসতার সৃষ্টি হলে মোশা বাহিনীর ৭০-৮০ জন সন্ত্রাসীরা এলাকায় শোডাউন, লোকজনকে মারধর এবং গুলিবর্ষণ করে। স্থানীয় লোকজন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করে। পরবর্তীতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে মোশা বাহিনীর সন্ত্রাসীরা তাদেরকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে শীর্ষ সন্ত্রাসী মোশারফ হোসেনকে গ্রেফতার করলে মোশা বাহিনীর সন্ত্রাসীরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর চড়াও হয়ে অতর্কিত গুলিবর্ষণ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ৫/৬ জন পুলিশ সদস্যকে আহত করে শীর্ষ সন্ত্রাসী মোশারফকে ছিনিয়ে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জ সহ এটা লিখ থানায় মোশারফ এর বিরুদ্ধে ৪০টি মামলা রয়েছে ৷