নগরকান্দার জোড়া খুনের মামলায় তিনজনের মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত ।
মামুন মিঞা
ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি।
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার কাইচাইল ইউনিয়নে চার বছর আগে জোড়া খুনের মামলায় ৩(তিন) জনের মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত।
রওশন আলী মিয়া ও মিরাজুল ইসলাম (তুহিন) হত্যা মামলায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারিক আদালত ।
রোববার (২০ আগস্ট) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক জেসমিন আরা বেগম এ রায় দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মিজানুর রহমান খান এ তথ্য জানিয়েছেন।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামি হলেন- নগরকান্দা উপজেলার কাইচাইল ইউনিয়ন এর বাবুর কাইচাইল গ্রামের হানিফ মিয়া ওরফে হৃদয়, এনামুল হাসান মিয়া ও কাইয়ুম মিয়া।
তাদের প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
হানিফ ও হাসান আপন দুই সহোদর।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামি হলেন- আউয়াল মোল্লা এবং রেজাউল মাতুব্বর। উভয়কে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
অপর আসামি দুলাল মিয়াকে ১০ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, অন্য ধারায় সাত বছরের কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দুই ধারার সাজা একত্রে চলবে বলে আদেশে উল্লেখ করেছেন আদালত।
হাবিবুর রহমানকে দুইটি ধারায় সাত বছরের কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে বাড়তি ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। পাচু মিয়াকে তিন বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে । রবিন শিকদারকে এক বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত ।
পারভেজ মিয়া, হাফিজুর রহমান, তুহিন মিয়া, রবিউল ইসলামকে এবং এম রাজু আহমেদ ও শহিদুল ইসলাের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সকলেই বেকসুর খালাস পেয়েছেন। মামলার বিচার চলাকালে আসাদুজ্জামান শিকদার নামে এক আসামি মারা গিয়েছেন।
গত ১৩ আগস্ট ২০২৩খ্রীঃ এ মামলায় রায়ের তারিখ ধার্য্য ছিলো। বিচারক ডেঙ্গুজ্বর আক্রান্ত হয়ে ছুটিতে থাকার কারনে ভারপ্রাপ্ত বিচারক এম আলী আহমেদ রায় ঘোষণার তারিখ পূনঃ নির্ধারণ করেন ২০ আগস্ট।
গত ৩ আগস্ট২০২৩খ্রীঃ রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০২৩খ্রীঃ ধার্য্য করেছিলেন।
উল্লেখ্য, নগরকান্দা উপজেলার কাইচাইল ইউনিয়নের বাবুর কাইচাইল গ্রামের হানিফ মিয়া (হৃদয়) এর সঙ্গে এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ ছিলো কাইচাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও কাইচাইল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কবির হোসেন ঠান্ডু মিয়া ওরফে ঠান্ডু মাস্টারের সাথে।
তারই জের ধরে ১০ আগস্ট-২০১৯খ্রীঃ বিকেলে মধ্য কাইচাইল মাদ্রসা মাঠে দুই পক্ষের মুখোমুখি সংঘর্ষের সময় হানিফ মিয়ার এলোপাথারি গুলিতে নিহত হয় বাবুর কাইচাইল গ্রামের রওশন আলী মিয়া ও মিরাজুল ইসলাম তুহিন।
পরদিন রওশন আলীর ভাই রায়হান উদ্দিন মিয়া বাদী হয়ে ২১ জনের নাম উল্লেখ করে, অজ্ঞাত আরও ৮-১০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে পিবিআই’র (ফরিদপুর) সাব-ইন্সপেক্টর আব্দুল মজিদ ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ৩৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।