মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ৩, ২০২৪

ট্রাম্প ২.০ এর আমলে বাংলাদেশের ভবিষ্যত কেমন হতে পারে?

Logo
Desk Report 2 রবিবার, ১৭ ২০২৪, ৩:১৭ অপরাহ্ণ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২০২৪ সালের নির্বাচনে জিতে আবারও হোয়াইট হাউসে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাংলাদেশে নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রভাব নিয়ে চলছে জল্পনা কল্পনা। ট্রাম্প প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতি কী হবে? কেমন হবে? তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে।
বাংলাদেশ- যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কেমন হবে তা নিয়েও চলছে আলোচনা।

ট্রাম্প প্রশাসনের বৈদেশিক নীতি সম্ভবত “আমেরিকা ফার্স্ট”, অভ্যন্তরীন স্বার্থ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনূকূল বাণিজ্য চুক্তি এবং দেশের অভ্যন্তরীন অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তার প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করবে। ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে অগ্রাধিকার পাবে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, মার্কিন-মেক্সিকো সীমান্ত সংকট, বাণিজ্য যুদ্ধের তীব্রতা, হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার সাথে সম্পর্কিত বিষয়গুলো। বাংলাদেশকে নিয়ে বেশি আগ্রহ দেখানো এবং মনযোগ দেওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে বাংলাদেশকে ঘিরে ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতি কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে। আসন্ন পরিবর্তন বাংলাদেশের রাজনীতি, বাণিজ্য, জলবায়ু পরিবর্তন, মানবিক সহায়তা ইত্যাদি বিষয়ে প্রভাবিত করবে।

ট্রাম্পের “আমেরিকা ফার্স্ট” নীতি বাংলাদেশ-মার্কিন বাণিজ্যকে প্রভাবিত করতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার। ট্রাম্পের শুল্ক বৃদ্ধির ইতিহাস এবং রক্ষনশীল নীতির প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি বাঁধার সম্মুখীন হতে পারে। তবে চীন-যুক্তরাষ্ট্র বিবাদমান বাণিজ্য প্রতিযোগিতার ফলে বাংলাদেশ লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারে চীনা পণ্যের আমদানি শুল্ক বাড়ানোর কথা বলেছিলেন। তাঁর সেই ঘোষনা বাস্তবায়িত হলে চীন থেকে তৈরী পোশাকের ক্রয়াদেশ স্থানান্তরিত হবে। তার একটা অংশ বাংলাদেশেও আসতে পারে। প্রথমবার ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা থাকার সময় ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হয়। এর ফলে ২০১৯ সালে ক্রয়াদেশ সরতে থাকে। চীনের হারানো ক্রয়াদেশের একটি অংশ বাংলাদেশেও পেয়েছিল। ফলে ওই বছর যুক্তরাষ্ট্রে ৫৯৩ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়, যা তার পূর্বের ৭ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল।

ট্রাম্প “লেনদেনমূলক কূটনীতি” এর উপর গুরুত্ব প্রদান করবে। যার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের মানবিক সহায়তা কমে যেতে পারে। সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলেন, “বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চাপ আছে, এবং যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ। বাইডেন প্রশাসন আমাদের জন্য সহায়তা সরবরাহ করেছে কিন্তু ট্রাম্পের নীতি ভিন্ন হতে পারে, যা আমাদের জন্য বিপদজনক হতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় অন্যতম প্রধান সহায়তাকারী দেশ। ২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত তারা এই সংকটে প্রায় ২৪০ কোটি ডলারের বেশি সহায়তা দিয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের সময় রোহিঙ্গা ইস্যুতে মানবিক সহায়তা কমতে পারে।

জলবায়ু পরিবর্তনে অন্যতম ঝুঁকিপূর্ন দেশ বাংলাদেশ। ট্রাম্পের পূর্বের প্রশাসন “প্যারিস জলবায়ু চুক্তি” থেকে বের হয়ে এসেছিল। এবারও জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে উদাসীনতা দেখা যেতে পারে। ট্রাম্প প্রশাসন যদি জলবায়ু চুক্তি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়, অর্থ সহায়তা কমিয়ে দেয় সেটি বাংলাদেশের জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বাংলাদেশ তার অভিযোজনের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ পাবে না। আন্তর্জাতিক সহায়তা কমে গেলে নিজস্ব সংস্থান ব্যবহার করে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করতে হতে পারে। ইউরোপীয় দেশগুলোর সাথে এই ইস্যুতে সম্পর্ক আরো উন্নত করে বিকল্প সহায়তা আনার চেষ্টা করতে পারে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ইউনূস ২০১৬ সালে ট্রাম্পের নির্বাচনী বিজয়ের সমালোচনা করেছিলেন। তিনি তখন এই জয়কে “সূর্যগ্রহন” এর সাথে তুলনা করে বলেছিলেন এটি যেন “আমাদেরকে বিনষ্ট না করে দেয়। আমাদের প্রাণচাঞ্চল্যকে যেন গ্রাস না করে ফেলে”। ইউনূসের ডেমোক্রেটিক পার্টির সাথে ঘনিষ্ঠতা বেশি। আদর্শগত দিক থেকেও ট্রাম্প ও ইউনূস বিপরীত মেরুর। যেটি বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। যদিও ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ইউনূস অভিবাদন জানিয়েছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ব্যাপারে তার অবস্থানও স্পষ্ট করেছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার নিন্দা জানিয়ে টুইট করেছেন, যেখানে তিনি বাংলাদেশকে “বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে” আখ্যায়িত করেন। বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নির্যাতন এবং ধর্মীয় সহিংসতার বিষয়টি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।
ট্রাম্পের এই মন্তব্য বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অধিকার বিষয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে এবং বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ইমেজের উপর এক ধরনের চাপ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে, বাংলাদেশের উপর মানবাধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক চাপ আরও বৃদ্ধি পেতে পারে, যদি ট্রাম্প প্রশাসন এই বিষয়ে দৃঢ় অবস্থান নেয়।

ADVERTISEMENT

ট্রাম্প প্রশাসনের পূর্বের সময়ে অভিবাসন নীতির কঠোরতা অনেক প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপর প্রভাব ফেলেছিল। ২০১৭ সালে ট্রাম্প ১১ জন অবৈধ বাংলাদেশী অভিবাসীকে বিতাড়িত করেছিলেন।
ট্রাম্প তার নির্বাচনের পূর্বেই ঘোষনা দিয়েছিলেন তিনি জয়ী হলে সকল অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়িত করবেন। বর্তমানে প্রায় ৫ লাখ বাংলাদেশী যুক্তরাষ্ট্র বসবাস করছে,তাদের মধ্যে কয়েক হাজার অবৈধ অভিবাসী ও রয়েছে যারা প্রতি মাসে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিচ্ছে।তাদের বিতাড়িত করলে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে একটি প্রভাব পড়বে। যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা, কাজ বা স্থায়ী বসবাসের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের তরুণ এবং দক্ষ জনগোষ্ঠী বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারে। বিশেষ করে, এইচ-১বি ভিসা বা অন্যান্য কর্মসংস্থান ভিত্তিক ভিসার ক্ষেত্রে কঠোর শর্ত আরোপ হতে পারে।

বাংলাদেশের উচিত হবে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা।যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে আমাদের বিনিয়োগ নীতিমালা গুলো আরো সহজ করা।যুক্তরাষ্ট্রের জন্য আমাদের বাজার উন্মুক্ত করে দেওয়া।কোন একক বলয়ে না গিয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলা।

 

-তাকীউদ্দীন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

মোঃ তারিকুল ইসলাম তুহিন, জেলা প্রতিনিধি,মাগুরাঃ কৃষিই সমৃদ্ধি এই প্রতিপাদ্য সামনে নিয়ে মাগুরা সদর উপজেলায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রবি ও ২০২৪-২৫ মৌসুমে প্রণোদনা …

সাজেদুল হক প্রান্ত , রিপোর্টারঃ ওমানকে হারিয়ে যুব এশিয়া কাপে শুভসূচনা করেছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২১ দল। মাঝের দুই ম্যাচ উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেলেও …

চট্টগ্রাম ব্যুরো : চান্দগাঁও থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আফতাব উদ্দিন এর নেতৃত্বে এসআই আজহারুল ইসালাম, এসআই লুৎফর রহমান,এএসআই সোহেল রানা, এএসআই রাজু …

চট্টগ্রাম ব্যুরো : দীর্ঘদিন ধরে অধিকারবঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেছেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি।বৈষম্য বিরোধী সাংবাদিক …