মাইশা ফাইরোজ, চট্টগ্রাম ব্যুরো– টেকসই উন্নয়ন বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত ইস্যু। আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এটাআরও বেশি জরুরি। কারণ আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। তবে আশার কথা, ব্লু–ইকোনমিতে বাংলাদেশেরদারুণ সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। গবেষণার মাধ্যমে এই খাত আমাদের দেশের অগ্রগতিতে প্রত্যক্ষ অবদান রাখতে সক্ষম হবে। চট্টগ্রামপ্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের আয়োজনে ৫ম বারের মতো দুইদিনব্যাপী “টেকসই উন্নয়ন ও প্রযুক্তির জন্যপদার্থবিজ্ঞান” শীর্ষক আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বাংলাদেশঅ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মেসবাহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, বিজ্ঞানের হাত ধরে পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কল্যাণেই বাংলাদেশের উন্নয়ন তড়িৎগতিতে সম্পন্ন হচ্ছে।৪র্থ শিল্প বিপ্লবের অগ্রযাত্রা পদার্থ বিজ্ঞানের ভূমিকা ছাড়া সম্ভব নয়। এ ধরনের আন্তর্জাতিক কনফারেন্স বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানী ওগবেষকদের একসাথে কাজ করার ক্ষেত্র তৈরি করে দেয়।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে চুয়েট–এর শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটরে আয়োজিত উক্ত কনফারেন্সে গেস্ট অফঅনার ছিলেন চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদেরডিন অধ্যাপক ড. সুনীল ধর।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কনফারেন্স চেয়ার ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. স্বপন কুমার রায়। স্বাগত বক্তব্যরাখেন কনফারেন্স সেক্রেটারি ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আশরাফ আলী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পদার্থবিজ্ঞানবিভাগের অধ্যাপক ড. অনিমেষ চক্রবর্তী। কনফারেন্সের এবারের থিম হচ্ছে– “উদীয়মান ভবিষ্যতের জন্য পদার্থবিজ্ঞান”।
গেস্ট অব অনার–এর বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, পৃথিবীর আচরণ বুঝতে পদার্থ বিজ্ঞানের প্রয়োজনীয়তাঅনস্বীকার্য। টেকসই উন্নয়নে পদার্থ বিজ্ঞানের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। পদার্থ বিজ্ঞান ছাড়া ইঞ্জিনিয়াররাও পূর্ণতা পায় না। এই ধরনেরআন্তর্জাতিক কনফারেন্স থেকে বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞান ও গবেষণার সর্বশেষ অগ্রগতি এবং তাদের সৃজনশীল চিন্তাভাবনা সম্পর্কেআমাদের শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা যেমন একটা ধারণা পায়, তেমনি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গ্রহণ ও তথ্যের আদান–প্রদান ঘটে। আমরা এখনডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আশা করি এই কনফারেন্স থেকে প্রাপ্ত আইডিয়া ওগবেষণালব্ধ জ্ঞানের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রাখবে।
দুই দিনব্যাপী কনফারেন্সের প্রথম দিনে পৃথক দুটি কী–নোট সেশনে প্রধান বক্তা ছিলেন ভারতের প্রফেসর ড. তনুশ্রী সাহা দাশগুপ্ত ওপ্রফেসর ড. সুশান্ত লাহিড়ী। এছাড়া ৮টি টেকনিক্যাল সেশনে কম্পিউটেশনাল ফিজিক্স, নিউক্লিয়ার ফিজিক্স, ম্যাটেরিয়ালস সায়েন্স, অ্যাটমোস্ফিয়ারিক ফিজিক্স ও ন্যানো ফিজিক্স প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা করা হবে। উক্ত কনফারেন্সে ৪টি কী–নোট স্পিস, ১৪টিইনভাইটেড স্পিস ও ১৪টি টেকনিক্যাল সেশনে ১১২টি প্রবন্ধ গবেষক এবং ১টি পোস্টার সেশনে ৫৭টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হচ্ছে।এবারের কনফারেন্সে বাংলাদেশ ছাড়াও যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, ফ্রান্স, তুরস্ক, ভারত, জাপানসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশহতে পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ের কয়েকশত শিক্ষক, গবেষক, বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, প্রফেশনাল এবং উদ্যোক্তাদের মিলনমেলা বসেছে।
এদিকে আগামীকাল ৮ই সেপ্টেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসটি মিলনায়তনে কনফারেন্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধানঅতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম।বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন চুয়েটের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রশীদ। এতে সভাপতিত্বকরবেন টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বেলাল হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখবেন কনফারেন্সের টেকনিক্যালসেক্রেটারি অধ্যাপক ড. এইচ.এম.এ.আর. মারুফ।
কনফারেন্স আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতায় থাকছেন– একিউসি গ্রুপ, ইন্টারসায়েন্স, তানিয়া, ইস্টার্ন রিফাইনারি, টেকনো–ওর্থ, পলিক্যাবলস, এনভায়োটেক কর্পোরেশন, জে–ইস ও হাইটেক।