
মাঈন উদ্দিন সোহেল, চট্টগ্রাম ব্যুরো- চট্টগ্রামের বায়োজিদ লিংক রোডের পার্শ্ববর্তী উত্তর পাহাড়তলী মৌজাধীন এলাকায় পাহাড় কেটেরাস্তা বানানোর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার ( ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুকের নেতৃত্বেঅভিযান পরিচালিত হয়।অভিযানে আরোও ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের ইন্সপেক্টর মামুন আহমেদ ও সিএমপি।
শনিবার (১২জুলাই) সকাল ১০টার দিকে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
সহকারী কমিশনার ( ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক জানান, সকালে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদফখরুজ্জামান মহোদয় বায়েজিদ লিংক রোড দিয়ে যাতায়াতের সময় পাহাড় কেটে রাস্তা নির্মাণের বিষয়টি নজরে আসলে দ্রুত ব্যবস্থানেয়ার নির্দেশনা দেয়ার প্রেক্ষিতে বায়োজিদ লিংক রোড সংলগ্ন এলাকার পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হয়।অভিযানকালে পাহাড় কাটার সাথে সম্পৃক্তরা পালিয়ে যায়।সরেজমিনে দেখা যায়, সিডিএ লিংকরোডের পার্শ্বে প্রায় ৯০ ডিগ্রীখাড়াভাবে পাহাড় কেটে রাস্তা নির্মাণ করেছে আকবর হোসেন খোকন নামের এক ব্যাক্তি।
রেকর্ড অনুযায়ী উত্তর পাহাড়তলী মৌজার টিলা শ্রেণির ১৯৩ দাগের ৬৪১/১০ খতিয়ানটির মালিক বিবির হাট, পশ্চিমপাড় এলাকারজাফর আহামদ মজুমদার, পাড়া
ও মোহাম্মদ হাছান আহাম্মদ কন্ট্রাক্টর, সাং- পশ্চিম ষোলশহর, বিবির হাট বড়, বাড়ি লেইন, থানা: পাচলাইশ। উক্ত জায়গাটির বায়নামূলে মালিক মো: আকবর হোসেন খোকন। তাদের পাহাড় কাটার বিষয়ে সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় এবং তাদের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনেনিয়মিত মামলা করা হচ্ছে।
এছাড়াও ৬৪১ নং বি এস খতিয়ান ও ৬৪১ হতে সৃজিত সকল নামজারি খতিয়ান সমূহের মালিকের লিংক রোড এলাকায় ১৯৩ দাগেপাহাড় কাটারও সত্যতা পাওয়া গেছে। এ টিলা শ্রেণীর জমিতে ১৯৩ দাগে সর্বমোট ১.৬০ একর জায়গা এবং একাধিক মালিকানারয়েছে। উক্ত জায়গার মালিকানা বিষয়ে উপস্থিত মানুষকে জিজ্ঞাসা করলে কেউ মালিকানা স্বীকার করেনি। তবে রেকর্ড অনুযায়ী (১) ৬৪১/১০ খতিয়ানটির মালিক বিবির হাট, পশ্চিম পাড় এলাকর জাফর আহামদ মজুমদার, পাড়া (২) মোহাম্মদ হাছান আহাম্মদকন্ট্রাক্টর, সাং- পশ্চিম ষোলশহর, বিবির হাট বড়, বাড়ি লেইন, থানা: পাচলাইশ। (৩) ৬৪১/১ নং খতিয়ানের মালিক মোহাম্মদ আইয়ুবমিঞ্চা, সাং- ধলইনগর, রাউজান, চট্টগ্রাম, (৪) ৬৪১/২ এর মালিক এস. এম নুরুন্নবী, সাং- উনসত্তর পাড়া, রাইজান, চট্টগ্রাম, (৫)৬৪১/৩ এর মালিক সৈয়দা মাসকুরা আক্তার, সাং- শিববাগী, ডাকঘর- শেরপুর, (৬) ৬৪১/৪ এর মালিক মোছাম্মৎ জেবুন্নাহার খানম, সাং- সিকদার বাড়ী, রাউজান, চট্টগ্রাম, (৭) ৭৫৭৮ নং খতিয়ানের মালিক মোছাম্মৎ শকিনা আক্তার চৌধূরী, সাং- হাসার তালুকদাড়েরবাড়ি, গড়দুয়ারা, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম, (৮)৬৪১/৬ এর মালিক মো: সোহরাব হোসেন, সাং- পাহাড়তলী, ডাক: বি. আইটি, রাউজান, চট্টগ্রাম, (৯) ৬৪১/৭ এর মালিক মোহাম্মদ ইলিয়াছ, পিং- হাজী মোহম্মদ ইসলাম সওদাগর, সাং- বড় দিঘীর পাড়, খন্দকিয়া, থানা : হাটহাজারী. (১০)৬৪১/৭/১ এর মালিক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, সাং- কদলপুর, রাউজান, চট্টগ্রাম, (১১) ৬৪১/৮ এর মালিক মো: ফরিদ মিঞ্চা, সাং- উনসত্তর পাড়া, রাউজান, চট্টগ্রাম, (১২) ৬৪১/৯ এর মালিক আবুল মনসুর (১৩) হাজী নুর আহাম্মদ রোড, পূর্বনাছিরাবাদ, চট্টগ্রাম, (১৩) ৬৪১/১০/১ এর মালিক মোহাম্মদ ইলিয়াছ, পিং- হাজী মোহম্মদ ইসলাম সওদাগর, সাং- বড় দিঘীর পাড়, খন্দকিয়া, থানা : হাটহাজারী, (১৪) ৬৪১/১০/৩ এর মালিক মোহাম্দ হামিদ, পিং- মৃত আবদুল ছমদ, সাং- চিকন দন্ডী (নতুন পাড়া), ফতেয়াবাদ, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম, (১৫) ৩৩৩২ এর মালিক ডা: শামীমা আকতার, স্বামী –ডা: মো: আবদুল্লাহ মামুন (১৬) ১৬৯৯ এরমালিক মোহাম্মদ সোলায়মান, পিং- নজির আহামদ, সাং- হাই লেভেল রোড, লালখান বাজার, ডাকঘর- দামপাড়া।
উক্ত দাগে ১৭ জনের মালিকানা থাকলেও অধিকাংশ জায়গা বায়নাসূত্রে মালিক মো: আকবর হোসেন খোকন। তাদের সবার বিরুদ্ধেআইনানুগ ব্যবস্থার অংশ হিসেবে পরিবেশ সংরক্ষন আইনে পরিবেশ অধিদপ্তর ও ওসি আকবরশাহকে নিয়মিত মামলার নির্দেশনাপ্রদান করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক।
খবর পাওয়া যায় এর আগে পরিবেশ অধিদপ্তর হতে ২ দফা সরেজমিনে পরিদর্শন করে গেলেও পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে কোন রকমমামলা করেনি। আজকের অভিযানে পরিবেশ সংরক্ষন আইনে পরিবেশ অধিদপ্তর ও ওসি আকবরশাহ কে নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
জনস্বার্থে জেলা প্রশাসনের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক বলেন, পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনের বহু অভিযান পরিচালনাকরা হয় এবং অনেক মামলা করা হয়েছে।আজকেও রাস্তা নির্মাণের বিষয়টি নিয়েও অনেকের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, লিংক রোডের পার্শ্বে দৃশ্যমান জায়গায় পাহাড় কেটে অবৈধভাবে রাস্তানির্মাণ করছে একটি চক্র।দ্রুততার সাথে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি।পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে।এক্ষেত্রে কারোওছাড় নেই। পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স। ইতোমধ্যেই যারা পাহাড় কেটেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলার মাধ্যমে শাস্তিমূলকব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।