

চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামের চিড়িয়াখানায় ১০ বছর পর জন্ম নিয়েছে ৪টি হলুদ পাহাড়ি কাছিমের বাচ্চা। বিলুপ্তপ্রায় কাছিম প্রাকৃতিক পরিবেশেতৈরি করা নতুন খাঁচায় ছেড়ে দিয়ে ১৫ মাসের মধ্যে ডিম ফুটে এসব কাছিমের জন্ম হয়।
রোববার (১১জুন) চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে ২০১৯, ২০২০ ও ২০২২ সালে চিড়িয়াখানায় হাতে তৈরি ইনকিউবেটরের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া ৬৫টি অজগরের বাচ্চা তিনধাপে প্রকৃতিতেঅবমুক্ত করা হয়েছিল। আবদ্ধ পরিবেশে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো চিতা বিড়াল প্রজনন করেছিল।
জানা যায়, চিড়িয়াখানায় ২০১৩ সালের পর বিপন্ন পাহাড়ি কাছিম প্রজনন করেনি। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা নির্বাহী কমিটির সভাপতি জেলাপ্রশাসকের উদ্যোগে এই কাছিমের জন্য ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নতুন খাঁচা তৈরি করা হয়।
খাঁচায় তাদেরকে প্রাকৃতিক পরিবেশে বিচরণের সুযোগ দেওয়া হয়। এতে ৮টি কাছিম প্রজননের পরিবেশ ফিরে পায়।
ডেপুটি কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ বলেন, বিভিন্ন পশুপাখির বংশবিস্তারের মাধ্যমে প্রকৃতিতে অবমুক্ত করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেচট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। এরই ধারাবাহিকতায় এবার প্রজননের সফলতায় নতুন যোগ হয়েছে হলুদ পাহাড়ি কাছিম। হলুদ পাহাড়ি কাছিমএকটি অতি বিপন্ন প্রাণি। যেসব পশুপাখি ৮০–৯০ শতাংশ বিলুপ্ত হয়েছে তাদের মধ্যে ‘অতি বিপন্ন’ এর তালিকায় রাখা হয়েছে হলুদ কাছিমকে।
তিনি জানান, হলুদ পাহাড়ি কাছিম মাটির নিচে সচরাচর ৩–৫টি কিংবা ১–৭টি ডিম পাড়ে। ১২০–১৫০ দিন অথবা ১০০–১৯০ দিনের মধ্যে ডিমফুটে বাচ্চা জন্ম নেয়। সেই হিসেবে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় জন্ম নেওয়া পাহাড়ি কাছিম প্রজননে একটু বেশি সময় নিয়েছে। বৃহস্পতিবার (৮ জুন) ৩টি এবং শনিবার (১০ জুন) আরও ১টি হলুদ কাছিমের বাচ্চা জন্ম নেয়।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ আশা করছে, ভবিষ্যতে এই প্রজাতির কাছিমের আরও বংশবৃদ্ধি হবে এবং পরবর্তীতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ওবন বিভাগের সহযোগিতায় উপযুক্ত পরিবেশে রি–ওয়াইল্ডিং এর মাধ্যমে বন্য পরিবেশে তাদের অবমুক্ত করা হবে।
হলুদ পাহাড়ি কাছিমকে চাকমা ভাষায় বলা হয় ‘পারবো ডুর’। এরা লম্বায় ৩৩ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। পরিপূর্ণ অবস্থায় ওজন দাঁড়ায় প্রায় ৩কেজি। বর্ষায় এরা ডিম পাড়ে। হলুদ পাহাড়ি কাছিম উভচর প্রাণী হলেও সাধারণত ডাঙায় থাকে। গুল্মজাতীয় খাবার এদের প্রিয়। সবুজ ঘাস, লতাপাতা, ফুল ও ফল খায়। এই কাছিমের কোষগুলো পাতলা এবং পায়ের আঙ্গুলগুলোর মাঝে বুনট চামড়ার জাল থাকে, খোলস সমতল ওসুষম আকৃতির। ডাঙায় থাকে বলে মানুষ এদের শিকারের মাধ্যমে মাংস রান্না করে খায়। ফলে দিন দিন এদের সংখ্যা কমছে।