
শাহরিয়ার সুমন– চট্টগ্রাম চান্দগাও থানা এলাকার মুরগি ফার্মের পাশে ‘আল্লাহর দান‘ নামক বেকারিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরিহচ্ছে নানান ধরনের খাবার । দামে সস্তা হওয়ায় চট্টগ্রাম শহর এবং জেলার নিম্ন মধ্য বিত্তের জনসংখ্যার প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষই এসবঅস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরী বেকারির খাবার গুলোর প্রতি ঝুকছে।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় নোংরা পরিবেশে তৈরি হওয়া খাবারগুলো স্তুপ আকারে ময়লার ওপর রাখা।
নগরীর চান্দগাঁও থানা এলাকার সানোয়ারা আবাসিক এলাকায় যাবার পথে “আল্লার দান” নামক সাইনবোর্ড বিহীন একটি বেকারিতেসরেজমিনে দেখা যায়, ইট–বালির গাঁথুনি দিয়ে ভাঙাচোরা টিনের নিচে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে বাহারি রঙের মুখরোচকভাবেখাবার গুলো তৈরি করা হচ্ছে। কারখানার প্রতিটি রুমের ভেতরে রয়েছে স্যাঁতস্যাঁতে গা ছমছম করা পরিবেশ। এছাড়া পোকামাকড় যেনোএই বেকারিটিকে অভয়ারণ্য হিসেবে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে করছে।
চান্দগাঁও থানার ছানোয়ারা আবাসিক এলাকায় মো. রবিউলের কারখানা এটি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এইসব বেকারির খাবারখেয়ে অনেক মানুষের আমাশয়, ডায়রিয়া, কলেরা, ফুড পয়জনিং সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিভিন্ন খাদ্যের সঙ্গে কীটপতঙ্গথাকতে দেখা গিয়েছে।আইন না মেনে পঁচা ডিম ও অন্যান্য বাসি সামগ্রী দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে বেকারির খাবার। কোনো খাদ্যের প্যাকেটেমেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ ও বিএসটিআই‘র অনুমোদিত স্টিকার বা বারকোড নেই।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বেকারি মালিক মো. রবিউল দৈনিক সরেজমিন‘কে বলেন, “আপনাদের অনেক সাংবাদিক আমাকে চিনে।প্রেসক্লাবের ডজনখানেক সাংবাদিক আমার পকেটে থাকে।” বিএসটিআই এর কথা জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, ভাইবিএসটিআই এর লোকজন এসে আমার অফিসে বসে থাকে।
সস্তায় নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে বিস্কুট, চানাচুর, পাউরুটি, বাটারবন, মিষ্টি, সন্দেশসহ বিভিন্ন বেকারির পণ্য।কারখানার ভেতরে যেখানে তৈরি করা খাবার রাখা আছে, সেখানেই ময়দা ও আটার গোডাউন। পাশে রাখা আছে জ্বালানির কাঠ ওছাই। সঙ্গে রয়েছে মানবদেহের জন্যে ক্ষতিকারক কেমিক্যাল এবং পামওয়েল এর ড্রাম। এর পাশেই ছড়ানো ছিটানো আছে নানা ধরনেরখাদ্যপণ্য।এসব খাদ্যদ্রব্য তৈরির জন্য আটা–ময়দা প্রক্রিয়াজাত করানো কড়াইগুলোও নোংরা। যেসব কর্মচারী এসব পণ্য তৈরি করছেন, তাঁদের শরীর থেকে ঝরছে ঘাম।
নগরীর এমন কোন সড়ক মহাসড়ক নেই যেখানে ফুটপাতে ভ্রাম্যমাণ চায়ের দোকানে ওইসব নিম্নমানের কেক,বিস্কুট, চানাচুর, পাউরুটি, বাটারবন, মিষ্টি, সন্দেশ ইত্যাদি শুকনো খাবার গুলো বিক্রি করা হয়না। মোট জনসংখ্যার একটা বৃহৎ অংশ ওইসব নিম্নমানের খাবারেরপ্রতি ঝুঁকেছে বলে এসব পণ্য উৎপাদিত কারখানা গুলোকে জনপ্রিয় বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।