মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ১০, ২০২৪

ঘূর্নিঝড় হামুন মোকাবেলায় প্রস্তুত বিছিন্ন দ্বীপ রাঙ্গাবালী

Logo
ডেস্ক রিপোর্ট মঙ্গলবার, ২৪ ২০২৩, ৮:৫৫ অপরাহ্ণ

মোঃরায়হান (পটুয়াখালী)

‘কয়েকমাস পরপরই একটা ঝড়-বাইন্যা আয়, পোলাপান লইয়া একটা ঝুপড়ি ঘরে থাকি। ঝড় আইলে আমাগো আর আল্লাহ ছাড়া কোনো ভরসা থাকে না। যদি পানি বাড়ে, তাহলে গাছ ধরা ছাড়া আমাগো উপায় থাকে না।’

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর উপকূলীয় দুর্গম দ্বীপ চরনজিরের বাসিন্দা ৪৫ বছরের মমতাজ বিবি একরাশ চিন্তা নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন। ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের বিচ্ছিন্ন এই দ্বীপের মানুষ ঘূর্ণিঝড়ের ভয়ে থাকেন।

এর অবশ্য কারণ আছে। যেমন, মমতাজ বিবি ২৫ বছর ধরে চরনজিরে বসবাস করছেন। এর আগেও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়াল থাবা তিনি দেখেছেন। চরনজিরের তিন দিকে নদী ও দক্ষিণে সাগরমোহনা। মোহনায় জেগে ওঠা এ দ্বীপের বাসিন্দা মমতজের স্বামী মো. আজগর (৬০) নদীতে মাছ ধরেন।

মমতাজ বিবি জানান, সিডরের বন্যার সময় যখন সব তলিয়ে যায়। তখন গাছ ধরে তিনি ও তার স্বামী বেঁচে ছিলেন। সেই সিডরের কথা মনে পড়লে আঁতকে ওঠেন তারা। এখনো আকাশে কালো মেঘ দেখলেই অজানা আশঙ্কা পেয়ে বসে।

এই গ্রামেই থাকেন হারুন (৫১) ও তার স্ত্রী রুজিনা বানু (৪৪)। তাদের দুই ছেলে মাসুদ রানা (২৪) ও মাসুম বিল্লাহ (১৮)। নদীতে মাছ ধরে চলে তাদের সংসার। হারুন জানান, সিডরের সময় পানি বেশি উঠেছিল। পরিবারের সবাইকে নিয়ে নৌকায় গাছের সঙ্গে রশি বেঁধে বেঁচে ছিলেন তারা।

ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও চরনজির এলাকার বাসিন্দা কামাল পাশা জানান, তাদের এই চরে ছয় শতাধিক মানুষ বাস করছেন। বেড়িবাঁধ ও আশ্রয় কেন্দ্র নেই। প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলে এই চরের মানুষ আতঙ্কে থাকেন। তবে ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাব থেকে রক্ষায় চরবাসীকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

ADVERTISEMENT

জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাঙ্গাবালী উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের আটটি বিচ্ছিন্ন চরে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নেই। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধও নেই। এ কারণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাস করছেন এই আটটি চরের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ। তাই যেকোনো দুর্যোগ ও ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করলেই এই চরের বাসিন্দার আঁতকে ওঠেন।

রাঙ্গাবালী উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ চরকাসেম। দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় বুড়াগৌরাঙ্গ নদে জেগে ওঠা চরকাসেমের বাসিন্দা ছালেহা বেগম (৪৫) জানান, ২০ বছর ধরে তিনি এই চরে বাস করছেন। তার স্বামী ফিরোজ আকন (৪৯) নদীতে মাছ ধরেন। এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তাদের সংসার।

ছালেহা বেগম জানান, অল্প বয়সেই বিয়ে হয়ে এই চরে আসেন তিনি। সিডরের সময় তিনি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ওই সময়ে যখন পানিতে চর তলিয়ে গেছে, তখন স্রোতের টানে ভেসে যাচ্ছিলেন। একসময় গাছ আগলে ধরে বেঁচে গিয়েছিলেন। এক দিন পর তিনি তার স্বামীকে খুঁজে পেয়েছিলেন।

ছালেহা বেগম বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণীর সময় উপজেলা প্রশাসন থেকে ট্রলার পাঠিয়ে তাদের নিরাপদে নিয়ে আসা হয়েছিল। বিচ্ছিন্ন এই চরগুলোয় বেড়িবাঁধ না থাকা ও ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় দুর্যোগে নদী পেরিয়ে মূল ভূখণ্ডে আসতে হয় তাদের।

রাঙ্গাবালী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মাইদুল ইসলাম বলেন, সরকারি বা বেসরকারি কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকায় চরগুলোয় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণে অনুমোদন পাওয়া যাচ্ছে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনুমোদিত হলে সেখানে প্রস্তাব পাঠিয়ে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া যেত।

সার্বিক বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানুর রহমান বলেন, মুজিব কিল্লাসহ ৮৯টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত আছে। আমাদের যে দুর্গম এলাকা আছে সেখান থেকে মানুষ সরিয়ে আনার জন্য পর্যপ্ত নৌকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।উপজেলার অনেক এলাকায় এখনো আশ্রয়কেন্দ্র নির্মিত হয়নি। ঘর্ণিঝড় হামুন মোকাবিলায় জরুরি সভা করে আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

বার্তা প্রেরক
মোঃরায়হান

মোঃ নুর ইসলাম সবুজ, লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি: লালমনিরহাটের আদিতমারীতে ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ এবং …

বান্দরবানের লামায় জুলাই-আগস্টে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের ঘটনা প্রবাহ, আহত ও বীর শহীদদের স্মরণে স্মরণসভা-মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার ৯ …

হামিদুল ইসলাম, লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি: কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার গোবিন্দপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন -২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৯ ই ডিসেম্বর) …

ইলিয়াছ হোসাইন, নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারুণ্যের একতা, গড়বো আগামীর সভ্যতা’-এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে র‌্যালী ও আলোচনা সভার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক …