মোঃ রিপন হাওলাদার
রাজধানীর ডিপলোম্যাটিক জোন গুলশান ও অন্যতম অভিজাত এলাকা বনানীতে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে স্পার আড়ালে মাদক -পতিতা ব্যবসা জমজমাট হয়ে উঠছে বলে একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে ।
স্পা নামক অবৈধ প্রতিষ্ঠানগুলোতে বডি ম্যাসাজের নামে শারীরিক প্রশান্তির অন্তরালে উর্তি বয়সি তরুণীদের দিয়ে অবৈধ দেহব্যবসা ও মাদক দ্রব্য সেবনের অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিন আগ থেকেই।
আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকা বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এসব অবাধ সমাজবিরোধী কার্যক্রম রোধে গুলশান বিভাগের দায়িত্বে থাকা একজন উপ-পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে তখন আলোচিত ভাবে অভিযান পরিচালিত হয়েছিল।
অভিযান শেষে গণমাধ্যমকে ব্রিফিং করে বলা হয়েছিল এসব স্পা নামক প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পূর্ণ অবৈধ।এই সকল ব্যবসা যাতে চলতে না পারে সে ব্যাপারে পুলিশ সব সময় নজরদারি চালিয়ে যাবে।
বৈধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে প্রাপ্ত লাইসেন্স এর নিয়ম অনুসারে। কিন্তু কোন লাইসেন্স ছাড়াই তারা হাঁকডাক দিয়ে তাদের রমরমা ব্যবসা করে যাচ্ছিল।
পুলিশের কার্যক্রমের পর নড়েচড়ে উঠে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন প্রদানকারী সংস্থা (ডিএনসিসি)র লাইসেন্স সরবরাহ শাখা।তারাও লাইসেন্স ছাড়া গড়ে ওঠা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনার করে ।
অবৈধ ব্যবসা বৈধ করতে লাইসেন্স শাখায় হিড়িক পড়ে স্পা ব্যবসায়ীদের। প্রতিষ্ঠানগুলো লাইসেন্স প্রাপ্তির নিয়মবহির্ভূত হওয়ায় লাইসেন্স পায়নি এসব ব্যবসায়ীরা।তারপরও অনেক অসাধু ব্যবসায়ীরা নানা কৌশলে স্যালুন বিউটি পার্লারের নামে সিটি কর্পোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্স এনে বিউটি পার্লারের তকমা লাগিয়ে তাদের মূল কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে।
বনানীতে পুলিশর চোখ ফাঁকি দিয়ে এমন কার্যকলাপ চলাকালে একটি স্পা প্রতিষ্ঠানে পুলিশ হানা দিলে একজন প্রকৌশলীর অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর ঘটনা।
গুলশান এলাকায় ডিএনসিসি’র লাইসেন্স না নিয়ে গড়ে তোলা কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করে মেয়রের কাছে করা এক অভিযোগের ভিত্তিতে গুলশান -২ নং এলাকার ৪৭ নং সড়কের একটি আবাসিক ভবনে অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়ে আসছিলো এমন প্রতিষ্ঠানে ডিএনসিসি’র অভিযানকালে একজন স্পা নারী কর্মীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
একজন নিষ্ঠাবান পুলিশ কর্মকর্তার দায়িত্বশীল নজরদারি ও ডিএনসিসি’র অব্যাহত ধড়পাকড়ে দিশেহারা অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত ব্যক্তিরা ব্যবসা গুটিয়ে কিছু দিন নিষ্কিয় থাকলেও আবারো তাদের আদি ব্যবসায় ফিরতে শুরু করেছে।
অনেকে পুলিশের ঝড়ঝাপটা উপেক্ষা করে বিভিন্ন ছত্রছায়ায় তাদের কার্যক্রম আরো বেপরোয়াভাবে করে যাচ্ছে এদের কোন ভাবেই নির্মূল বা নিষ্কিয় রাখতে পারছে না সংশ্লিষ্টরা।
যেমন:গুলশান-২ নম্বর এলাকার বাড়ি নং -৩৩ রোড নং ৪৫ হোটেল এইচ এর (চতুর্থ তলা) (১) অধরা থাই স্পা/বিউটি থাই স্পা মালিক রত্না আক্তার, গুলশান -২,২৫/১/এ প্ল্যাটিনিয়াম মার্কেটের ৩য় তলায় (২)ডায়মন্ড বিউটি এন্ড স্পা মালিক প্রিন্স আকাশ ওরফে নয়ন আকাশ, গুলশান -১ বাড়ি নং ৯১/বি,রোড নং -২৪, রতনপুর ক্যাসেল এর (৩য় তলা)
(৩)মালিক আবুল হোসেন শাওন ও লাকী, বাড়ি নং:-২৩/বি,রোড নং ১০৪ , (৪)মালিক লাকী নামে এক নারী, গুলশান:-১ রোড:-নং ১৩১,বাড়ি নং ৬০/বি, খুশবু রেষ্টুরেন্ট এর উপরে (৫)স্মার্ট বিউটি কেয়ার মালিক সুমনা ওরফে সুলতানা,(৬) গুলশান:-১ রোড:-১৩০, বাড়ি নং ২৮ লিপ্ট এর -৪ , মালিক লাবনী আক্তার ইভা, বনানী কবরস্থান ২৭ নং রোডের ৩৭ নং বাড়ির ৫ম তলায় বহু পরিচয় দানকারী শহীদ এর পরিচালিত একটি স্পায় দেদাড়ছে অনৈতিক কর্মকাণ্ড চলছে।
এই প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন যাবৎ একই স্থানে তাদের অনিয়ন্ত্রিত কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে।
একজন বাসিন্দা নাম না প্রকাশের শর্তে বলছেন, এসব কার্যক্রমে লিপ্ত ব্যক্তিদের নিষ্কিয় রাখতে যাদের নজরদারি রাখা দরকার তারাই হয়তো অজানা কারণে দায়িত্ব থেকে নিষ্কিয় রয়েছে বলে মনে হচ্ছে ,তা না হলে গত কয়েক মাসের ব্যবধানে হঠাৎ করে তাদের দৌড়াত্ম আগের মতো বেড়ে গেছে। অনেকে আবার নতুন ভাবে প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে শুরু করেছে।
মূল কথা হলো সমাজ বিরোধী
কার্যক্রমকে প্রশ্রয় না দেওয়া ব্যক্তিরা যতো দিন আবার এমন দায়িত্বশীল চেয়ারে আশ্বিন না হবে ততো দিন এসব কর্মকাণ্ড নির্মূল বা নিষ্কিয় হবে তা আশা করা যায় না। গণমাধ্যম কর্মীরা সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে নিজেদের ঝুঁকি নিয়ে সংগঠিত এমন সমাজ বিরোধী কর্মকান্ডের তথ্য তুলে ধরেন সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্তা ব্যক্তিদের দৃষ্টি গোচরের জন্য তারা হয়তো বিষয়গুলো বিধি মতো সুরাহা করবেন। আমরা সাধারণ বাসিন্দারা সব সময় প্রত্যাশা করি অশ্লীলতার এমন আগ্রাসন থেকে সামাজিক পরিবেশ ও পাপাচার মুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে পুলিশ তার যথাযথ ভূমিকা রাখবে।