সিনিয়র রিপোর্টার:
খিলক্ষেত সরকারি রেলওয়ে জমিতে হিংস্র শকুনের চোখ পড়েছে। হিংস্র থাবা থেকে রক্ষা পেতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ চায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।সরোজমিনে ঘুরে দেখা যায় প্রতিনিয়ত চলমান দখল-হামলা চাঁদাবাজিতে মহাব্যস্ত চিত্র ভিডিও অডিও প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। বিএনপি-কথিত যুবদল খোকন। ছাত্রদলের রকি পাটোয়ারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ নিয়ে সর্বক্ষণ মহড়া দেয় বাজারে। নেতা-কর্মী দখল বাণিজ্য পূর্বের তুলনায় অতিষ্ঠ হয়ে গেছে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন । গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর খিলখেত সমস্ত এলাকা জুরে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন বিএনপি-যুবদলের কতিপয় নেতাকর্মী। তাদের বিরুদ্ধে জমি দখল, বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর, চাঁদা আদায়সহ নানা অভিযোগ উঠেছে। মহানগর পর্যায়ের শীর্ষ নেতারাও তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না। কোনো কোনো নেতাকর্মী আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নিপীড়নকারীদেরও মোটা টাকার বিনিময়ে নিরাপদ আশ্রয় দিচ্ছেন। তাদের অবৈধ বালুমহালও দেখভালের নামে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন যুবদলের এক নেতা। এসব তথ্য স্বীকার করেছেন বিএনপির স্থানীয় কয়েকজন নেতাও। তাদের ভাষ্য, এদের কারণে দলীয় সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। অভিযোগগুলো দলীয় নেতাদের জানানো হলেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ আগস্ট খিলক্ষেত প্রেসক্লাব দখল করে নেন কথিত নেতা যুবদলের খোকন,ছাত্রদলের রকির নেতৃত্বে আনোয়ার মল্ফু,খিলক্ষেত প্রেসক্লাব ভাঙচুরও লুটপাট করেন।স্থানীয়রা বলছেন ভালো-মন্দ বিবেক বিবেচনা বুদ্ধি তারা হারিয়ে ফেলেছে রাজহাঁসের মত যা পায় তাই খেয়ে নিচ্ছে।
(-২)——————————————-
খিলক্ষেত ‘বিএনপির সাইনবোর্ডে’ চাঁদার নিয়ন্ত্রণ ও দখলের অভিযোগ
খিলক্ষেত্র রেলওয়ের সরকারি জমি দখল করে অজস্র দোকান বসিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এখানকারই স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে বাজারে গিয়ে চাঁদাবাজির তথ্য পাওয়া গেলো।
দোকানিরা জানাচ্ছেন, আগে আওয়ামী লীগের লোকজন চাঁদা তুললেও এখন এর নিয়ন্ত্রণ ‘অন্য গ্রুপের’ হাতে। শুধু চাঁদা তোলার কার্যক্রম নতুন স্টাইলের পরিণত হয়েছে।
প্রতিদিন দোকানপ্রতি তোলা হচ্ছে চারশত ৬০০ টাকা করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানি বলছিলেন, “আওয়ামী লীগ এখন নাই। কিন্তু এরপরও দুইদিন চাঁদা দিলাম না। পরের দিন আইসা কয় টাকা মাফ নাই। হ্যারা নাকি এখন টাকা তুইল্যা অন্য গ্রুপের কাছে দিতাছে।”
অন্য গ্রুপ মানে কী এমন প্রশ্নে অবশ্য খোলাসা করে কিছু বলেননি চাঁদাবাজ।
“আগে যে ম্যানেজার কালেকশন করতো, সে ছিল আওয়ামী লীগের ম্যানেজার। ঐ ম্যানেজারই কালেকশন করতাছে। এখন টাকা নিয়া সে কারে দেয়, সেই প্রশ্ন আর করি নাই।
আরেকজন দোকানি জানালেন, আগের মতোই তিনি পাচশত টাকা করে চাঁদা দিচ্ছেন।
“আমি একদিন দিছি চারশত টাকা। পরের দিন দোকান খুলি নাই, টাকাও দেই নাই। আজকে খুলছি, এখন টাকা দেয়া লাগবে।”
বাংলাদেশে কোনো একটি সরকার পরিবর্তনের পর ব্যক্তির বদল ঘটলেও দুর্নীতি, আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি কিংবা দখলের যে পুরনো ব্যবস্থা, সেটার পরিবর্তন খুব একটা হয় না।
এবার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও কমবেশি একই চিত্র দেখা যাচ্ছে।
বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি, প্রভাব খাটানো এমনকি দখলের মতো অভিযোগ উঠছে বিএনপি যুব দলের থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক খোকন, সাদ্দাম,শাহজাহান,রানা, মামুন,সবুজ, বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।যদিও অন্তবর্তীকালীন সরকার তো বটেই খোদ বিএনপির শীর্ষ নেতাদের পক্ষ থেকেও বলা হচ্ছে এ ধরনের ঘটনায় কোনো ছাড় না দেয়ার কথা।
কিন্তু এতে করে কি চাঁদাবাজি আর দখল বন্ধ হয়েছে? বাস্তবতা অবশ্য সেটা বলছে না।
আগে আওয়ামী লীগের লোকজন দোকান, রিক্সা স্ট্যান্ড,অটো রিস্কা, ফুটপাত,জুট ব্যবসা, রেলওয়ে ,সরকারি জমির দখল করে শত শত দোকান নির্মাণ করেছে। রাস্তার দুই পাশ দখল করে তৈরি করেছেন টাকা কামানোর মেশিন।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়। রাস্তার পাশে মাছ বাজার, কাঁচাবাজার, ফলের দোকান, ডিম পট্টি, মুরগির দোকান। মাছপট্টি, কয়েকটি দলীয় ক্লাব, নাম প্রকাশ্য অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী বলেন প্রতি দোকানপতি ২ লক্ষ ফল দোকান থেকে আড়াই লক্ষ টাকা এডভান্স নেওয়ার অভিযোগ নেতাদের বিরুদ্ধে। মূলত. সরকারি জায়গায় যেসব দোকান আছে সেগুলো থেকে ভাড়ার নামে চাঁদা তোলা হয়। এগুলো সব আওয়ামী লীগের ব্যানারে হয়েছে। পট পরিবর্তনের পরে এখন বিএনপির সাইনবোর্ড লাগায়ে ঐ গ্রুপটাই আবার শুরু করছে। তাদের পেছনে আছে বিএনপির নেতা যুবদলের খোকন ও অন্যান্য লোকজন।”
আওয়ামী লীগের অফিস এখন বিএনপির দখলে।
ঢাকার বাইরে যেমন দখল, চাঁদাবাজির চিত্র আছে তেমনই একই অভিযোগ আছে খিলক্ষেত বাজার থেকে খা পাড়া পর্যন্ত।
সরকারি রেলওয়ের জায়গা দখল করে ফুটপাতের আওয়ামী লীগের কার্যালয় ছিল।ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর সেই কার্যালয়ের দখল নিয়েছে খিলক্ষেত থানা কথিত যুবদল নেতা খোকন। সরেজমিনে দেখা গেলো, জাতীয়তাবাদী যুবদলের একটি ব্যানার ঝুলছে।
খোঁজ নিতেই জানা গেলো, যুবদলের নেতা-কর্মীরা কার্যালয় দখল করার পর এখানেই বিচার শাসন করেন। অভিযোগ উঠেছে যুবদল ছাত্রদল কয়েকটি বাহিনীর বিরুদ্ধে আপাতত কেউ কিছু বলতে চায় না।সবার থেকে অন্যতম খোকনের বিরুদ্ধে কিছু বলার সাহস পায় না কেউ।
স্থানীয় একজন বাসিন্দা জানালেন, দখলের পর পার্টি অফিসে চলে সবকিছু এখানে রাতদিন সমান।
“শেখ হাসিনা পালাইবার পরে এখানে এখন বিএনপি দখল করছে। কিন্তু ওরা ব্যানার লাগাইছে, ক্ষমতা আসার আগে চলছে দখল বাণিজ্যের প্রতিযোগিতা স্থানীয়দের ভিতরে অনেকে নানান কথা বলছে। ফুটপাত রেলওয়েতে ৫০০ বেশি দোকান নিয়ন্ত্রণের পরেও সর্বোপরি খিলক্ষেত প্রেসক্লাবেও লুটপাট চালিয়েছেন এই চক্রটি এমনই অডিও-ভিডিও কিছু চিত্র অপরাধ বিচিত্রা দপ্তরে এসেছে।খিলক্ষেত প্রেসক্লাব ভাঙচুর লুটপাট নিয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন খিলখেত প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হাবিব সরকার( স্বাধীন)
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার পতনের পর ৫ই অগাস্ট খিলক্ষেত প্রেসক্লাব কার্যারয়টি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়লুটপাট করে নিয়ে যায় সমস্ত মালামাল বর্তমান খিলখেত প্রেসক্লাবের স্থানটির দখল করে আনোয়ার থাই এলুমিনিয়াম হাউস বসিয়ে ব্যবসার সাজিয়েছেন। বিএনপির কথিত নেতা আনোয়ার ওরফে মোবাইলের স্বীকার করেন বিএনপি নেতাকর্মীরাই খিলক্ষেত ভাঙচুর করেছেআমি করিনি। হাজী আসলামের ক্লাব, রফিক ব্যাপারীর ক্লাবওরাই ভেঙেছে যার অডিও রয়েছে প্রতিবেদকের হাতে স্পষ্টভাষায় স্বীকারোক্তি এই কর্মকান্ডে আনো জড়িত নয়। বিএনপি নেতা-খোকন ছাত্রদলের রকি ও তার দলবল কর্মীরা জড়িত ।প্রেসক্লাব ভাঙচুর করে পরের দিন দ্রুত গতিতে সেটি মেরামত করে নিজেদের দখলে নেয়।আনোয়ার, মল্ফু, চরমাইল খাদেম নামধারী আদম ব্যবসায়ী রিপন।
———————————————
চাঁদা আছে, চাঁদা নেই
চলছে তবু গোপনে …….……..
ঢাকা শহরে সবখানেই যে চাঁদা তোলা হচ্ছে এমনটা নয়। একদিনে ঢাকার পাঁচটি স্পটে ঘুরে খোঁজখবর নিয়ে দেখা যায়, এর মধ্যে চারটি স্পটেই চাঁদাবাজির স্পষ্ট বুঝা যায় হঠাৎ বুঝার কোন সুযোগ নেই।
মূলত ফুটপাতের হকার, রাস্তার পাশের দোকান, পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে এসব খাতে চাঁদাবাজির তথ্য পাওয়া গিয়েছে।
গতকালকে একজন আইসা বইলা গ্যাছে, চাঁদা দেওয়া লাগবো। পরে আবার বিকালে আরেক গ্রুপ আইছে। বলছে ট্যাকা এখন থেইকা আমরা উঠামু, অন্য কাউরে দিবা না। আমি পরে কইছি, আপনারা আগে মিটিং কইরা ঠিক করেন কারে দিমু।”
এর বাইরে বিভিন্ন এলাকায় আছে মার্কেটের দোকান দখল এবং গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসার হস্তান্তর চেয়ে হুমকি দেয়ার ঘটনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৈরি পোশাক কারখানার একজন কর্মকর্তা প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, তাদের কারখানায় বিএনপির পরিচয়ে এসে ঝুটের ব্যবসা হস্তান্তরের জন্য হুমকি দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, “ঝুটের ব্যবসা এখন আমরা করবো। অন্য কাউকে দিবেন না। কারখানায় এসে এইরকম কথা বলে গেছে। হুমকি দিয়ে গেছে। বারোটা /পোনরেটা মোটরসাইকেল নিয়ে কারখানায় ঢুকে। বলে যে বিএনপির অমুক বড় নেতা পাঠিয়েছে। এখন কথা হইছে পাটাপোতা ঘষাঘষি মরিচের জীবন শেষ। আওয়ামী লীগের বিএনপি দলাদলি তে জনগণের জীবন শেষ।