মোঃ ফারুক হোসেন: কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউজে স্থাপিত উদ্ভিদ সংগনিরোধ ল্যাবরেটরী আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন ল্যাবরেটরীতে রূপান্তর প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক জগত চাঁদ মালাকারের ভূয়া বিল ভাউচার ও ঠিকাদারদের সাথে গোপনে আতাত করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সূত্রে জানা যায় প্রকল্পটি ২০২১ সালের অক্টোবরে একনেকে অনুমোদিত হয় (২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদে)। উক্ত প্রকল্পের ফোকাল পয়েন্ট ছিলেন জগৎ চাঁদ মালাকার। উক্ত প্রকল্পটিতে ল্যাবরেটরী স্থাপনের জন্য ১১১ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়। উক্ত প্রকল্পের ফোকাল পয়েন্ট জগৎ চাঁদ মালাকার বিভিন্ন কোম্পানীর সাথে যোগ সাজস করে ৬৯ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ৪২ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা অতিরিক্ত মূল্য দেখিয়ে ডিপিপি-তে ১১১ কোটি টাকার মূল্যের যন্ত্রপাতি সন্নিবেশিত করে। উল্লেখিত যন্ত্রপাতি ক্রয় করার জন্য জুলাই ২০২২ সালে প্রকল্প পরিচালক জগৎ চাঁদ মালাকার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। কিন্তু কৃষি মন্ত্রণালয় তার প্রকল্পের দূর্নীতির বিষয়ে আজ করতে পেরে ও বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে মন্ত্রণালয়কৃত। উক্ত কমিটির কৃষি মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা-২ অধিশাখার যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ এনামুল হক কে সভাপতি করে ও সদস্য ড. মোঃ সুলতান আহমেদ, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউট, ডা. আবু সাঈদ মোঃ আব্দুল হান্নান, উপপরিচালক, বাংলাদেশথ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, ড. হাবিবুল বারি সজিব, সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনষ্টিটিউট, ড. মুফতিখার আহমেদ, এক্রেডেটেড ল্যাবরেটরি স্পেশালিষ্ট, কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউজে স্থাপিত উদ্ভিদ কে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ প্রদান করেন। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায় উল্লেখিত কমিটি গত ৩১ শে জানুয়ারী, ২০২৩ইং সালে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন কৃষি মন্ত্রনালয়ে জমা প্রদান করেন। তদন্ত কমিটি উক্ত প্রকল্পের আর্থিক অনিয়ম দূর্নীতি হয়েছে মর্মে অনেকগুলো বিরুপ মন্তব্য করেছেন বলে সূত্রে জানা যায়। মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল বর্তমান বাজারদর বিবেচনা কমিটির সুপারিশসমূহ কার্যকর হলে প্রকল্পের ডিপিপিতে ১০টি ল্যাবের জন্য প্রাক্কলিত মূল্য ১১১৫৪.৩৫ লক্ষ (১১১ কোটি ৫৪ লক্ষ ৩৫ হাজার) টাকার বিপরীতে যন্ত্রপাতি ও রাসায়নিক দ্রব্যাদি ক্রয় যাতে উপযুক্ততা নির্ধারণসহ যন্ত্রের স্পেফিফিকেশন ও বাজার দর বিচার বিশ্লেষণপূর্বক প্রায় ৬৮৭৬.৮০ লক্ষ (৬৮ কোটি ৭৬ লক্ষ ৮০ হাজার) টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। উল্লেখ্য যে, এতে ডিপিপিতে উল্লেখিত প্রাক্কলিত মূল্য প্রায় ৪277.৫৫ লক্ষ (৪২ কোটি ৭৭ লক্ষ ৫৫ হাজার) টাকার সাশ্রয় হবে। ল্যাব ওয়ার্ক সম্পর্কে খুব কম অভিজ্ঞতা সম্পন্ন লোকের মাধ্যমে স্পেসিফিকেশন তৈরি করা হয়েছে এবং স্পেসিফিকেশন তৈরিতে কোন ইকুইপমেন্ট ব্রশিউরকে হুবুহু কপি করা হয়েছে বলে তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ ছিল। এছাড়া ১.৪ মিলিয়ন ইউএস ডলার ব্যয়ে (প্রাক্কলিত ব্যয়ের ৪০%) ১৯টি মাইক্রোস্কোপ ক্রয়ের সংস্থান অস্বাভাবিক। এ টাকায় সম্পূর্ণ কার্যকরী কয়েকটি ল্যাব স্থাপন করা সম্ভব। অপরপক্ষে প্রায় ২ ইউএস ডলার ব্যয়ে মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবের জন্য শুধুমাত্র ১টি ১মিলি Serological pipette ক্রয়ের সংস্থান অপ্রতুল। এছাড়াও উল্লেখিত তদন্ত কমিটি বিপুল সম্পদের মালিক
আরও ৭টি মন্তব্য করেছেন যার প্রতিটি প্রকল্প পরিচালক জগৎ চাঁদ মালাকারের ডিপিপি প্রণয়নে অদক্ষতার প্রমাণ মেলে। তদন্ত কমিটির মন্তব্য সূত্রে জানা যায়- সুপারিশকৃত যন্ত্রপাতি, ক্যামিকেলস ও কনজুমমেবলস ক্রয়ের ক্ষেত্রে স্পেসিফিকেশন মূল্যায়ন কমিটিতে ল্যাবরেটরি কাজে দক্ষ ও অভিজ্ঞ বিজ্ঞানী/পরামর্শকদের রেখে মূল্যায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য সুপারিশ করা হয়। বর্তমান বাজারদর বিবেচনায় কমিটির সুপারিশসমূহ কার্যকর হলে প্রকল্পের ডিপিপিতে ১০টি ল্যাবের জন্য প্রাক্কলিত মূল্য ১১১৫৪.৩৫ লক্ষ ( ১১১ কোটি ৫৪ লক্ষ ৩৫ হাজার) টাকার বিপরীতে যন্ত্রপাতি ও রাসায়নিক দ্রব্যাদি ক্রয় খাতে উপযুক্ততা নির্ধারণ সহ যন্ত্রের স্পেসিফিকেশন ও বাজার দর বিচার বিশ্লেষণপূর্বক ৬৮৭৬.৮০ লক্ষ (৬৮ কোটি ৭৬ লক্ষ ৮০ হাজার) টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। উল্লেখ্য যে এতে ডিপিপিতে উল্লেখিত প্রাক্কলিত মূল্য প্রায় ৪২99.55 লক্ষ ( ৪২ কোটি ৭৭ রক্ষ ৫৫ হাজার) টাকার সাশ্রয় হবে বলে তদন্ত সূত্রে জানা যায়। উক্ত প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক জগৎ চাঁদ মালাকারের প্রকল্প পরিচালক নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে বলে জানা যায় সূত্র মতে: পরিকল্পনা কমিশনের ১টি প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ আছে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রকল্প পরিচালকের চাকুরির বয়স প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়কাল পর্যন্ত থাকতে হবে। কিন্তু কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউজ প্রকল্পের মেয়াদ অক্টোবর- ২০২১ থেকে জুলাই ২০২৪ইং সাল পর্যন্ত কিন্তু জগৎ চাঁদ মালাকারের চাকুরীর বয়স ৩১শে ডিসেম্বর ২০২৩ ইং সাল পর্যন্ত যা পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের প্রজ্ঞাপনের ব্যতয় ঘটানো হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তাগণ এই প্রতিবেদক কে জানান প্রকল্প পরিচালক জগৎ চাঁদ মালাকার প্রকাশ্যে অন্যান্য কর্মকর্তাদের সাথে প্রকাশ করে থাকেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের বর্তমান সচিব সাবেক অতিরিক্ত সচিব ওয়াহিদা আক্তার জগৎ চাঁদ মালাকারের বন্ধু হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় বলে থাকেন এবং বর্তমান সচিবের দুহাই দিয়ে ও প্রভাবিত করে নিয়ম কে অনিয়ম বানিয়ে দূর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছেন পিডি জগৎ চাঁদ মালাকার এবং দেদারচ্ছে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তাগণ এই প্রতিবেদনকে জানান কৃষি মন্ত্রণালয় যদি উক্ত প্রকল্পের তদন্ত কমিটি গঠন না করতেন। চলতি বছরের জুলাই মাসে উল্লেখিত যন্ত্রপাতি ক্রয়ের ১১১ কোটি টাকার টেন্ডার আহ্বান করা হলে উল্লেখি ৪২ কোটি টাকা জগৎ চাঁদ মালাকার লুটপাট করে আত্মসাত করার পায়তারা করছিলেন। এতে করে সরকারের কোটি কোটি টাকা অতিরিক্ত ক্ষতিসাধন হতো। ভুল তথ্য দিয়ে প্রকল্পটি একনেকে পাশ করানোর জন্য প্রকল্প পরিচালক জগৎ চাঁদ মালাকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত বলে একাধিক কর্মকর্তাগণ মনে করেন। এছাড়াও প্রকল্পের আহ্বানকৃত দরপত্রের ক্যামিকেল মালামাল অতি নিম্নমানের গ্রহণ করে ব্যাপক দূর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন এবং ভূয়া বিলা-ভাউচারের মাধ্যমে এমসিকিউ, আরএফকিউ ও আনুসাঙ্গিক খাতে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়। এভাবে অবৈধ পন্থায় দূর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন তিনি। রাজধানী সহ তার দেশের বাড়ী