
কুমিল্লায় বিগত আওয়ামী সরকার আমলে বিএনপি জামায়াতের বিভিন্ন নেতা-কর্মীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের ঘুষ বানিজ্য করে কোটিপতি বনে যাওয়া এসআই মাহফুজুর রহমান শাস্তির বদলে ভালো জায়গায় পোস্টিং জনমনে ক্ষোভ।
সূত্রমতে আওয়ামীলীগের শাসন আমলে পুলিশে চাকুরী পাওয়াটাই একটা সোনার হরিন। থানায় জিডি, মামলা, চুরি ডাকাতীসহ নানান অপরাধে অভিযুক্তদের নামে থানায় আইনি সেবা পেতে গেলেই বাদী ও বিবাদীকে দিতে হতো মোটা অংকের টাকা।
এছাড়া সামাজিক কিছু জটিলতা নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে গেলেই থানার গোলঘর নামে একটি শালিসী বিচারালয় ডেকে নিয়ে যে পক্ষ ঘুষ বেশি দিবেন, তার পক্ষেই বিচারের রায় চলে আসতো। এছাড়াও আওয়ামীলীগের উপজেলা ও থানা পর্যায়ে নেতাদের আধিপত্য নিয়ে ওই পুলিশ অফিসার আইনের বাহিরে গিয়েও এমন কাজ করে হয়েছেন কোটিপতি।
কুমিল্লায় মাত্র কয়েক বছর পুলিশে চাকুরী করে বেতনের পাশা পাশি কোটি টাকা দিয়ে পুরাতন বাড়ী কিনেছেন মাহফুজুর রহমান নামে এক পুলিশের এসআই। তিনি কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা ও ইপিজেড পুলিশ ফাঁড়িতে থাকাকালিন বিভিন্ন শালিসী দরবার করে বাদী ও বিবাদী থেকে বিচারের রায়ের টাকা ও পক্ষ-বিপক্ষের থেকে টাকা নিয়ে সমাধান করতেন।
এছাড়াও বিভিন্ন ফুটপাতের দোকান ও ফল দোকান থেকে চাঁদা আদায় তো ছিলোই। আওয়ামীলীগ, যুবলীগের কিছু নেতার নাম বিক্রি করে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিতেন ইপিজেডের বিভিন্ন কোম্পানী থেকে। এমন বানিজ্য ও বিএনপি জামায়াত নিধনের নামে মোটা অংকের টাকা আদায় করেই কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা।
স্থানীয় সূত্র জানান, কুমিল্লা সিটিকর্পোরেশনের ২১ নং ওয়ার্ডের শাকতলা এলাকায় প্রায় আড়াই কোটি টাকা দিয়ে জায়গা ক্রয় করেন। এছাড়াও রয়েছে ইডিজেডসহ বিভিন্ন মহাসড়কে রেন্ট-কারএ গাড়ীর ব্যবসা। পরবর্তি সময়ে ইপিজেড পুলিশ ফাঁড়িতে তার এমন কর্মকান্ডে তাকে বদলী করে নিয়ে যাওয়া হয় পুলিশ সুপার কার্যালয়ে ডিএসবি শাখায়।
ডিএসবি শাখায় গিয়েও তার পূর্বের আধিপত্য বিস্তারে টমছমব্রিজ, শাকতলা ও আশ্রাফপুর এলাকায় তার চাঁদাবাজিতে মাতোয়ারা হয়ে উঠে। ডিএসবি শাখায় পাসপোর্টের তদন্ত রিপোর্ট, রাজনৈতিক নেতা ও শিল্পপতিদের বিভিন্ন রিপোর্টে ছিল তার টাকার ভাগ। বিষয়টি কুমিল্লা জেলা পুলিশের নজরে আসলে তাকে বদলী করা হয় ফেনী সদর থানায়। বর্তমানে সরকার পতনের পর চাকুরী করবে? নাকি চাকুরী ছেড়ে পালাবে এমন চিন্তায় আছেন এসআই মাহফুজুর রহমান।
তাহার মাসিক বেতনে পরিবার সামলানোর পর প্রায় আড়াইকোটি টাকা দিয়ে জায়গা ক্রয় করা, বিভিন্ন ভাবে ব্যবসার কাজে লাগানো আরো প্রায় ২ কোটি টাকা বিনিয়োগ কি করে সম্ভব একজন পুলিশ অফিসারের? বিষয়টি নিয়ে নানান প্রশ্ন সুশিল সমাজের। আওয়ামী সরকারের আমলে এরকম আধিপত্য করে টাকা কামিয়ে সম্পদের পাহাড় তৈরী কি করা অফিসারের শাস্তি দাবী পুলিশসহ কর্মীদের। এ বিষয় তার সাথে মুঠোফোনে বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি জমি কেনার বিষয়টি স্বীকার করেন, প্রতিবেদককে অনুরোধ করেন সংবাদটি প্রকাশ না করার জন্য।