খান নাজমুল হুসাইন
সাতক্ষীরা কলারোয়া “সরসকাটি ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়” নিয়োগ বোর্ডের পূর্বে প্রার্থী চুড়ান্ত করার অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, উল্লেখিত বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক পদে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দীন ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শামসুদ্দীন আল মাসুদ এর পরস্পর যোগসাজশে নিয়োগ পরীক্ষার আগেই টাকার বিনিময়ে একজন প্রার্থীকে মনোনীত ও চুড়ান্ত করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, কলারোয়া উপজেলার ১নং জয়নগর ইউনিয়ন এর খোদ্দবাটরা গ্রামের বিজয় গুপ্ত এর ছেলে সুশান্ত গুপ্ত কে অফিস সহায়ক পদে মনোনীত ও চুড়ান্ত করে তার নিকট থেকে ১৭ লক্ষ টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেন “সরসকাটি ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়” এর প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দীন ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শামসুদ্দীন আল মাসুদ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ তুলে বলেন, মেধা নয় শুধুমাত্র টাকার বিনিময়ে অযোগ্য প্রার্থীকে নিয়োগ প্রদান করা হবে। নিয়োগ পরীক্ষার আগে প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কর্তৃক প্রার্থী চুড়ান্ত অপকর্মে সহযোগিতা করছে ডিজি প্রতিনিধি তালা “শহীদ আলী আহম্মদ সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়” এর প্রধান শিক্ষক অলোক কুমার তরফদার, কলারোয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জয়নাল আবদীন জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি কলারোয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল ইমরান। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সরসকাটি ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক পদে চুড়ান্ত করা প্রার্থী সুশান্ত গুপ্ত এর মাঝে ইতিমধ্যে প্রশ্নপত্র ফাঁস করা হয়েছে। পরীক্ষায় কি ধরনের প্রশ্ন করা হবে তা আগেভাগেই টাকার বিনিময়ে প্রধান শিক্ষক এর মাধ্যমে প্রার্থীর নিকট সরবরাহ করা হয়েছে। যে কোন মুল্যে প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি তাদের মনোনীত এবং চুড়ান্ত করা প্রার্থীকে নেওয়া হবে বলে একাধিক সুত্রে জানা গেছে।
টাকার মোহে পড়ে নীতি-নৈতিকতার বিসর্জন দিয়ে প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কর্তৃক প্রার্থী চুড়ান্ত অপকর্মে লিপ্ত হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। সরসকাটি ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৯ জুন শনিবার সকাল ১০ টায় একটি সাজানো পাতানো লোক দেখানো নিয়োগ বোর্ড বসানোর মাধ্যমে প্রার্থী সুশান্ত গুপ্ত কে নিয়োগ প্রদান করা হবে বলে এ দাবি করেন স্থানীয়রা। সরেজমিনে খোজ খবর নিয়ে জানা গেছে, নিয়োগ বোর্ডের আগে অফিস সহায়ক পদে চুড়ান্ত করা প্রার্থী সুশান্ত গুপ্ত এর পিতা বিজয় গুপ্ত তার ভাইপো সঞ্জিত গুপ্তর নিকট জমি বিক্রয় করেন অফিস সহায়ক পদে চাকরির জন্য।
এ বিষয় “সরসকাটি ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়” এর প্রধান শিক্ষক ও নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব নাসির উদ্দীন এর সাথে মুঠো ফোনে একাধিক বার আলাপের চেষ্টাকালে আলাপ কলটি গ্রহণ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ বিষয় “সরসকাটি ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়” এর ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও পদাধিকারবলে নিয়োগ কমিটির সভাপতি শামসুদ্দীন আল মাসুদ এর সাথে মুঠো ফোনে আলাপকালে নিয়োগ বোর্ডের আগে ১৭ লক্ষ টাকায় সুশান্ত গুপ্ত কে অফিস সহায়ক পদে মনোনীত ও চুড়ান্ত করার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন। এ বিষয় ডিজি প্রতিনিধি তালা “শহীদ আলী আহম্মদ সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়” এর প্রধান শিক্ষক ও পদাধিকারবলে নিয়োগ কমিটির সদস্য অলোক কুমার তরফদার এর সাথে মুঠো ফোনে একাধিকবার আলাপের চেষ্টা কালে আলাপ কলটি গ্রহণ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয় জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি কলারোয়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নিয়োগ কমিটির সদস্য আব্দুল্লাহ আল ইমরান এর সাথে মুঠো ফোনে আলাপকালে কলারোয়া সরসকাটি ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কর্তৃক ১৭ লক্ষ টাকায় চুড়ান্ত করা অফিস সহায়ক পদে সুশান্ত গুপ্ত কে নিয়োগ প্রদান করা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নিয়োগ বোর্ড সম্পন্ন করা হবে। এখানে প্রার্থী চুড়ান্ত করার কোন সুযোগ নেই। নিয়োগ কমিটিকে ম্যানেজ করার মাধ্যমে প্রশ্ন পত্র ফাঁস করার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি নিজেই প্রশ্ন করবো সুতরাং ফাঁস হওয়ার কোন সুযোগ নেই।
এ বিষয় কলারোয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জয়নাল আবদীন এর সাথে মুঠো ফোনে আলাপকালে সরসকাটি ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কর্তৃক মনোনীত প্রার্থী সুশান্ত গুপ্ত কে পরীক্ষার আগে টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন পত্র ফাঁস করার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমি এখানে নতুন এসেছি আমাকে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডের জন্য চিঠি দিয়েছে এর বেশি আমি কিছুই জানিনা। এ বিষয় সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা অফিসার শাহাজাহান কবির মুঠো ফোনে আলাপকালে তিনি বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার আগে প্রার্থী চুড়ান্ত করার কোন সুযোগ নেই। বিধিমোতাবেক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। নিয়মমাফিক নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করা না হলে সে নিয়োগ অবৈধ বলে বিবেচিত হবে।