ক্রাইম রিপোর্টারঃ নাজীর আহম্মেদ খান
সাধারণ মানুষকে অল্প সময়ে বেশি মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন মাল্টি লেভেল মার্কেটিং -এমএলএম কোম্পানির বিপুল পরিমাণে অর্থ আত্মসাৎ করে লাপাত্তা হওয়ার ঘটনা বাংলাদেশে নতুন কিছু নয়। এ ধরণের জালিয়াতি থেকে বাঁচতে কিছু ক্ষেত্রে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
সম্প্রতি হঠাৎ বাংলাদেশে আবির্ভাব হয়েছে লুমিনাস এগ্রো এন্ড কসমেটিক্স লিমিটেড (লুমিনাস গ্রুপ) মিরাক্কেল ব্রান্ড সহ বিভিন্ন নামে একাধিক প্রোডাক্ট নিয়ে একটি মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানির। যারা ঢাকার বিলাস বহুল সিটি গুলশানে থেকে কৃষি ও কসমেটিক্স প্রোডাক্স এর মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এখানে মূলত বিনিয়োগকারীদের উচ্চ মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলানো হয়। সেই লাখ লাখ বাংলাদেশি কৃষক সহ বিভিন্ন খেটে খাওয়া মানুষের কাছ থেকে নিজ নিজ একাউন্টের মাধ্যমে অধিক মুনাফা পেতে বিনিয়োগ করতে বলা হয়। কিন্তু গ্রাহকরা বিনিয়োগ করা টাকা শেষ পর্যন্ত আর তুলতে পারেননি বলে অভিযোগ করেনে একাধিক ভুক্তভোগী।
একসময় অধিক মুনাফার আশ্বাস দিয়ে ফাঁদ পেতেছিল যুবক, ডেসটিনি, ই-ভ্যালির এমটি এফ এর মতো প্রতিষ্ঠান। যাদের বিরুদ্ধে দেশের সাধারণ মানুষের হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানগুলো টাকা হাতিয়ে উধাও হওয়ার পর আজ পর্যন্ত কোন টাকা উদ্ধার করা যায়নি।
বরং এই কোম্পানিগুলো অ্যানালগ পদ্ধতি থেকে এখন ডিজিটাল মাধ্যমে তাদের প্রতারণার তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে।
এখন আর পণ্য বিক্রি, প্রশিক্ষণ বা বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির কথা বলে নয় বরং রিয়েল এস্টেট, শেয়ার বাজার ও আবাসিক হোটেল সেবায় বিনিয়োগের মাধ্যমে অল্প সময়ে বিপুল পরিমাণ আর্থিক মুনাফার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।
কখনও ই-কমার্সের নামে, আর্থিক সমবায় প্রতিষ্ঠান হিসেবে, আবাসনসহ নানা ব্যবসার সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে এর আড়ালে অভিনব কৌশলে চালাচ্ছে এমএলএম ব্যবসা। যার প্রলোভনে হুমড়ি খেয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে লাখ লাখ মানুষ।
বিশ্লেষকদের মতে, এই কোম্পানিগুলোর মূল পুঁজি মানুষের ‘লোভ’। কোম্পানিগুলো অল্প সময়ে অধিক লাভের উপায় দেখানোর ফলে ব্যাপক সংখ্যক মানুষ এইসব ব্যবসায় যোগ দিচ্ছে এবং অপরকে যোগ দিতে উৎসাহিত করছে।
এক্ষেত্রে যে কোনো কোম্পানির সাথে আর্থিক লেনদেনের আগে সেটা কোন এমএলএম প্রতিষ্ঠান কিনা এবং প্রতারিত হওয়ার ভয় আছে কিনা তা বুঝতে কয়েকটি বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
লুমিনাস কোম্পানীর সিইও আলাউদ্দিন- (৪৫) মদনপুর, নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা হলেও ডেমরার ডগাইর এলাকা থেকে একটি ঠিকানার সাইনবোর্ড ব্যাবহার করে ও সরকারী কর্ম-কর্তাদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে খামারবাড়ি থেকে লাইসেন্স সংগ্রহ করেন। এইছাড়াও ট্রেড লাইসেন্স ব্যবহার করা ঠিকানায় সরেজমিনে তদন্ত করে দেখা যায় সেইখানে তাদের অফিস/ফ্যাক্টরীর কোন অস্তিত্ব নেই।
এছাড়াও আলাউদ্দিন তাঁর মদনপুর এলাকা থেকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রতারনা করে সাধারন মানুষের কাছ থেকে অর্থ সহ হরেকরকম প্রতারনা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। কো ম্পানীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাদের পক্ষ থেকে কোন সহযোগিতা পাওয়া যায়নি।