
তামান্না দেওয়ান দোলাঃ
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে আট বছরের এক শিশু, যে তার বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। চিকিৎসকদের ভাষ্যমতে, শিশুটির অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক, এবং বর্তমানে ভেন্টিলেটর যন্ত্রের সাহায্যে তার শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে।
শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুটিকে দেখতে যান সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। শিশুটির করুণ অবস্থা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “যে মেয়েটি এখনো মেয়ে হয়ে ওঠেনি, নারী হয়ে ওঠেনি, তার গায়ে হাত দেয় কী করে? এই দেশটি কি কাপুরুষের দেশ হয়ে গেল? যারা এই বর্বরতা চালিয়েছে, তারা সমাজে কীভাবে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে?”
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “এই সমাজ কি সুস্থ আছে বলে মনে হয়? এসব দমন করা শুধু প্রশাসনের দায়িত্ব নয়, আপনাদেরও দায়িত্ব আছে। এই পচে যাওয়া সমাজকে বদলাতে হলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। শিশুটির জীবন বাঁচাতে ডাক্তাররা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, আর তরুণ সমাজ প্রতিবাদ করছে। আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব যেন এই শিশুটি ন্যায়বিচার পায়।”
তিনি আরও বলেন, “সবাই দোয়া করবেন যেন শিশুটি বেঁচে যায়। ডাক্তাররা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে এসব অপরাধ বারবার ঘটছে, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এখানে অপরাধীর পরিচয় স্পষ্ট, তাদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া যাবে না। বিচার নিশ্চিত করতে হবে।”
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানান, শিশুটির অবস্থা সংকটাপন্ন। পাশবিক নির্যাতনের ফলে তার যৌনাঙ্গে গুরুতর ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে এবং গলায় প্রচণ্ড আঘাত রয়েছে। তার চিকিৎসার জন্য গাইনি ও অ্যানেসথেসিওলজি বিভাগের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে, যারা সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন।
গতকাল শুক্রবার রাতে শিশুটির অবস্থার আরও অবনতি হলে তাকে গাইনি বিভাগ থেকে শিশু বিভাগের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকরা শিশুটিকে বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। জাতির প্রতি আহ্বান, এমন ঘৃণ্য অপরাধের বিরুদ্ধে সবাই যেন সোচ্চার হয় এবং অপরাধীরা যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায়।