
দেলোয়ার হোসেন
সেবা প্রদানে ডিএনসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীর অনিয়মের প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুশিয়ারি প্রশাসকের
ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানিয়েছেন ‘ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নতুন ১৮টি ওয়ার্ডে অবকাঠামো উন্নয়ন অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। নতুন ওয়ার্ডগুলোতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এই এলাকায় অনেক কাজ করতে হবে। উন্নয়ন কাজ ও নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে অনেক অর্থের প্রয়োজন। কিন্তু নতুন ওয়ার্ড থেকে আমরা নামমাত্র রাজস্ব পাচ্ছি। অনেকের মধ্যে প্রশ্ন হচ্ছে আমরা প্রয়োজন অনুযায়ী সেবা পাইনা, আমরা কেন ট্যাক্স দিবো? আমাদের তো আসলে আপনাদের ট্যাক্সের বিনিময়েই সেবাগুলো নিশ্চিত করতে হবে। আপনারা এ বিষয়টি খেয়াল রাখবেন।’
গত কাল (১১ মার্চ ২০২৫) দুপুরে গুলশান নগরভবনে সম্মেলন কক্ষে ডিএনসিসির নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সাথে গণশুনানিতে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ এসব কথা বলেন।
গণশুনানিতে নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের আওতাধীন রাজনীতিবিদ, স্কুল-কলেজের শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, বাজার কমিটির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক ও নেতৃবৃন্দ, সোসাইটির নেতৃবৃন্দ, যুবক ও ছাত্র প্রতিনিধি এবং স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।
গণশুনানিতে বক্তব্য রাখেন ঢাকা -১৮ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী অধ্যক্ষ আশরাফুল হক, তিনি বলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে অন্তর্ভুক্ত ১৮ ওয়ার্ডের ১৪ টি ওয়ার্ড ঢাকা ১৮ আসেন মধ্যে। এই ওয়ার্ড গুলো ইউনিয়ন পরিষদের আওতাভুক্ত ছিলো। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ২০১৮ সালে সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত হলেও নাগরিক তেমন কোনো সুবিধা সিটি করপোরেশন থেকে দেয়া হয় নাই। রাস্তা ঘাট ব্রীজ , সুয়ারেজ , স্ট্রীট লাইট , ওয়াসার পানি সুবিধা কোনটাই এই এলাকার মানুষ পায় না।কোনো নাগরিক সেবা না দিয়ে উল্টো ২০১৮ সাল থেকে হোল্ডিং ট্যাক্স ধার্য করে বাসা বাড়িতে চিঠি দেয়া হচ্ছে যা অন্যায্য ও এলাকার মানুষকে আতংকিত করেছে। এই ওয়ার্ড গুলোর নাগরিকরা তিতাস গ্যাসের বিল চুলা প্রতি মাসে ১০৮০ টাকা করে দিলেও তেমন গ্যাস পায়না ,বরং বাড়তি সিলিন্ডার কিনে রান্নাবান্নার কাজ সারতে হচ্ছে মা বোনদের ।বর্ষা আসার আগেই রাস্তার কাজ দ্রুত শেষ করে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া।পাবলিক টয়লেট , খেলার মাঠ , সরকারি হাসপাতাল ,পার্ক এবং ভালো স্কুল চালুর জোর দাবী জানান।শুনানিতে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিদ্যার শিক্ষক মো: কবীর উদ্দিন ,তিনি মশা কিভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে নির্মূল করা যায় তা তুলে ধরেন। উত্তরা দক্ষিণ মেট্রোরেল এর নিচ দিয়ে ডিওএইচএস প্রবেশের রাস্তা খালা খন্দক সংস্থার করে মানুষের চলাচলের উপযোগী করতে অনুরোধ করেন। যে সকল সড়ক প্রসস্থ করা হয়েছে ১০/১২ বছর আগে কিন্তু এখনো বিদ্যুতের খাম্বা রাস্তায় রয়ে গেছে এতে রাস্তা প্রসস্থ হলেও তার সুবিধা নাগরিকরা পাচ্ছে না , জ্যাম লেগে থাকছে অতিদ্রুত এধরণের বিদ্যুতের খাম্বা রাস্তা থেকে অপসারণ করার জোর দাবী জানান।
ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, ‘ডিএনসিসিতে পূর্বের ৩৬ টি ওয়ার্ডের সাথে নতুনভাবে আরও ১৮ টি ওয়ার্ড যুক্ত হয়েছে, ওয়াসা থেকে খালগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে, ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কিন্তু কোন লোকবল ও যান যন্ত্রপাতি পায়নি ডিএনসিসি। সিটি কর্পোরেশন ভাগ হওয়ার সময় যে লোকবল ছিল বর্তমানে তার চেয়ে আরও কমেছে। অনেকে অবসরে গিয়েছে, অনেকে মারা গিয়েছে। সীমিত লোকবল ও যান যন্ত্রপাতি দিয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষের সেবা নিশ্চিত করাও ডিএনসিসির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা মন্ত্রণালয়ে জানিয়েছি। লোকবল নিয়োগের জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছি৷’
একজন বাসিন্দার প্রশ্নের জবাবে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, ‘সেবা প্রদানে ডিএনসিসির কোন কর্মকর্তা, কর্মচারী অনিয়মের সাথে জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমি দায়িত্ব নেয়ার পরে সবাইকে হুশিয়ার করে দিয়েছি। কোন অনিয়ম, দুর্নীতির প্রমান পেলে কোন ছাড় দেওয়া হবে না, কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’