ইফতেখার হোসেন, চট্টগ্রাম ব্যুরো- দেশের বিভিন্ন জেলায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ইমো একাউন্ট হ্যাক করা প্রতারক চক্রের ৫ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপির) কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের সাইবার ইউনিট।
শনিবার (২৯জুলাই) সকালে সিএমপিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত জানায়।
কাউন্টার টেররিজম বিভাগের সাইবার ইউনিট এ সময় জানায়, গ্রেফতারকৃতদের নিকট থেকে অপরাধ কার্যক্রমে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও সিম জব্দ করা হয়।
হ্যাকিং চক্রের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এ পর্যন্ত তারা ইমো একাউন্ট হ্যাকিং এর মাধ্যমে প্রতারণা পূর্বক বিকাশ, নগদ একাউন্ট ব্যবহার করে দেশ ও বিদেশের অনেক ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।
অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি/ব্যক্তিরা ইমো একাউন্ট হ্যাক করে উক্ত ইমো একাউন্টের কন্টাক্ট লিস্টে থাকা ব্যক্তিদের নিকট থেকে প্রতারণার মাধ্যমে বিকাশ এবং নগদ একাউন্ট ব্যবহার করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এমন ঘটনা জানতে পেরে ভুক্তভোগী সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগে অভিযোগ করলে তাকে চকবাজার থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের করার পরামর্শ প্রদান করা হয়।
পরবর্তীতে ভুক্তভোগী ২৩জুলাই চকবাজার থানায় এজাহার দায়ের করলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করলে। মামলার তদন্তভার কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের সাইবার ইউনিট দায়িত্ব পায়। সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের সাইবার ইউনিট মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে। পরে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আসিফ মহিউদ্দীন এর তত্ত্বাবধানে সাইবার ইউনিটের একটি টিম মামলার রহস্য উদঘাটনে কার্যক্রম শুরু করে। আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মামলার রহস্য উদঘাটন করে ঘটনার সাথে জড়িত প্রকৃত ব্যক্তিদের গ্রেফতার অভিযানে নামে সাইবার ইউনিটের টিম। পাবনা জেলার ঈশ্বরদী থানা এলাকা হতে প্রথমে মো. আরিফুল ইসলাম (৩১) কে গ্রেফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্যমতে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী থানা এলাকা হতে মো. শিমুল হোসেন (২২) কে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্য মতে নাটোর জেলার লালপুর থানা এলাকা হতে মো. সাহাবুল ইসলাম প্রকাশ শাহাবুল (৩৯), মো. ইব্রাহিম হোসেন প্রকাশ বাপ্পী (২১) এবং মো. হৃদয় হাসান প্রকাশ শাহীন (২৩) দের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের দেয়া তথ্য মতে অন্যান্য সহযোগীদের গ্রেফতারের জন্য চৌকস টিমটি দেশের ঢাকা জেলার সাভার থানা এলাকাসহ নোয়াখালী জেলার সুধারাম ও বেগমগঞ্জ থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। গ্রেফতারকৃতদের নিকট হতে হ্যাকিং ও অর্থ হাতিয়ে নেয়ার কাজে ব্যবহৃত মোবাইল, সিম উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা ইমো একাউন্ট হ্যাক করে উক্ত ইমো একাউন্টের কন্টাক্ট লিস্টে থাকা ব্যক্তিদের নিকট হতে প্রতারণার মাধ্যমে বিকাশ এবং নগদ একাউন্ট ব্যবহার করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়ার সত্যতা স্বীকার করে। ইতোপূর্বেও তারা অসংখ্য ইমো একাউন্ট হ্যাক করে দেশে ও বিদেশে অবস্থানরত বিভিন্ন ব্যক্তিদের প্রতারিত করে বিকাশ ও নগদ একাউন্টের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।গ্রেফতারকৃতরা হ্যাকিং চক্রের সক্রিয় সদস্য। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে পূর্বের একাধিক মামলা বিচারাধীন রয়েছে। ইমো একাউন্ট হ্যাকিং গ্রুপের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।