
মোস্তফা কামাল :
প্রায় ছয় বছর আগে ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে ট্রেনের পরিত্যক্ত বগিতে প্রেমিকাকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে মারুফ হাসান বাঁধন নামে এক যুবকের ফাঁসির রায় দিয়েছে আদালত।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেছেন, ”বিশ্বাসের অমর্যাদাকারীদের শাস্তি না হলে সমাজে নেতিবাচক বার্তা যাবে।”
ঢাকার পঞ্চম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহাম্মদ সামছুল ইসলাম হৃদয় বৃহস্পতিবার এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, কারাগারে আটক আসামি বাঁধনকে এদিন আদালতে হাজির করা হয়। তার উপ¯ি’তিতে বিচারক রায় পড়া শুরু করেন। প্রায় পৌনে এক ঘণ্টায় রায় পড়া শেষে বিচারের সিদ্ধান্ত জানান বিচারক। আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ ‘সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায়’ তাকে মৃত্যুদÐ দেওয়া হয়েছে। রায়ের পর সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় আসামি বাঁধনকে।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, “প্রেমিককে বিশ্বাস করে বাড়ি থেকে তার হাত ধরে পালিয়ে আসে মেয়েটি। সেই বিশ্বাসের অমর্যাদা করে তাকে ঢাকায় এনে ধর্ষণ করার পর হত্যা করে। এই জঘন্যতম অপরাধের জন্য তার সর্বো”চ শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।”
মামলার বিবরণে জানা যায়, প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হওয়ার পর ২০১৯ সালের ১৮ অগাস্ট পঞ্চগড় থেকে বাঁধনের সঙ্গে পালিয়ে ঢাকায় চলে আসেন ওই তরুণী। কোনো আবাসিক হোটেল না পেয়ে তারা কমলাপুর রেলস্টেশনেই অব¯’ান করেন।
এক পর্যায়ে বলাকা ট্রেনের একটি পরিত্যক্ত বগিতে তাকে নিয়ে যান বাঁধন। সেখানে তিনি ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন। সে সময় ওই তরুণী চিৎকার করলে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করে বাঁধন।
এরপর তিনি পঞ্চগড়ে ফিরে যান। ১৯ অগাস্ট সকালে ট্রেনের বগিতে ওই তরুণীর লাশ পায় রেল কর্মীরা। পরে তার সঙ্গে থাকা একটি ব্যাগের ভেরত জন্ম সনদ পেয়ে তার বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিচয় নিশ্চিত হয় পুলিশ।
এ ঘটনায় মেয়েটির চাচা ঢাকার রেলওয়ে থানায় মামলা করেন। ২৩ অগাস্ট পঞ্চগড় থেকে বাঁধনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
পরে এ মামলায় তার বিচার শুরু হয়। ১৪ জনের সাক্ষ্য নিয়ে বৃহস্পতিবার বাঁধনকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দিল আদালত।
একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, এই রায়ের কারণে বিচারক সামসুল ইসলাম হৃদয় বিচার বিভাগের জন্য এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ¯’াপন করেছেন। ইতোমধ্যেই তিনি দেশব্যাপী হয়েছেন সমাদৃত।
#