সজল আহাম্মদ খান , আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) থেকে।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শেষ পর্যন্ত ‘ঐক্যের প্রার্থী’ দিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের সংসদ সদস্য ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের আমন্ত্রণে ঢাকায় তাঁর গুলশানের কার্যালয়ে গিয়ে নেতা-কর্মীরা চেয়ারম্যান পদে ঐক্যের প্রার্থী হিসেবে মো. মুরাদ হোসেনকে সমর্থন দেন। তবে ভাইস চেয়ারম্যান পদটি উন্মুক্ত থাকবে বলে রবিবার রাতের আলোচনায় উঠে আসে। অবশ্য ঐক্যের প্রার্থী করেও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে আওয়ামী লীগ
রবিবার রাতের সভায় উপস্থিত আখাউড়া পৌর যুব লীগের সভাপতি মো. মনির খান বলেন, ‘সভায় চেয়ারম্যান পদের জন্য অনেকে আরিফুল হক বাছিরের কথা বলেছেন, অনেকে মুরাদ হোসেনের কথা বলেছেন। বক্তারা প্রার্থীদের পক্ষে বিপক্ষে না কথা বলেন। শেষ পর্যন্ত মুরাদ হোসেনকে সমর্থন দিতে বলা হয়। তবে মন্ত্রী মহোদয় সরাসরি কারো বিষয়ে কিছু বলেননি। আর ভাইস চেয়ারম্যানের বিষয়টি উন্মুক্ত রাখার বিষয়ে আলোচনা হয়। এ নিয়ে ফেসবুকে একজনের পক্ষে যা লেখা হচ্ছে সেটা মোটেও সত্য নয়।’
এ বিষয়ে আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক মো. মনির হোসেন বাবুল বলেন, ‘মন্ত্রী মহোদয় আমাদেরকে বলেছেন যে দলের ঐক্যের স্বার্থে আমরা আলোচনা করে একজন প্রার্থী ঠিক করতে। সেই অনুযায়ি মুরাদ হোসেনকে সমর্থন দেওয়া হয়। মন্ত্রী মহোদয় আমাদের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন।কথা হলে আরিফুল হক বাছির সোমবার সকালে বলেন, ‘আমি এখনো ঢাকায় আছি। এলাকায় ফিরে জনগনের সঙ্গে কথা বলে আমার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিবো। এলাকার মানুষ যেহেতু আমাকে চাচ্ছে তাই আমার নির্বাচন করার সম্ভাবনা অনেক বেশি।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী বলেন, ‘আমরা মুরাদ হোসেনকে সমর্থন দিয়েছি। মন্ত্রী মহোদয় আমাদের সিদ্ধান্তে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘চেয়ারম্যান প্রার্থী বোরহান উদ্দিন আমাদের সভায় এলেও একক প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্তের কাগজে স্বাক্ষর করেননি। শুনেছি ওনি নির্বাচন করবেন। আর মুরাদ হোসেনকে বলেছি সে যেভাবেই হোক বাছিরকে (আরিফুল হক) ম্যানেজ করে এসে সবাইকে নিয়ে মাঠে নামতে।’
আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মনির হোসেনের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ওবায়দুল কাদের যে নির্দেশনা দিয়েছেন সারাদেশে নির্বাচন উন্মুক্ত ও নিরপেক্ষ হবে সেই হিসেবে মাননীয় আইন মন্ত্রীর পরামর্শক্রমে আমি নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি কে কি বলল আমার কিছু যায় আসে না আমি মন্ত্রী মহোদয়ের প্রতি শতভাগ শ্রদ্ধা রেখে ইনশাআল্লাহ নির্বাচন করব। জনগণ একজন ভালো ব্যক্তিত্ব চাইতেছে। জনগণ আমার পাশে আছে। যদি সঠিক নির্বাচন হয় উন্মুক্ত নির্বাচন হয় তাহলে আমি শতভাগ আশাবাদী ইনশাল্লাহ পাস করবো।
সভায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এম.পি স্পষ্ট করে বলে দেন যে, ‘দলের সভানেত্রী বলেছেন নির্বাচন উন্মুক্ত। এখানে কোনো দলীয় প্রতীক থাকবে না। সাধারন সম্পাদক বলেছেন মন্ত্রী এমপিরা যেন এতে নাক না গলায়। আমি এর বাইরে না। বাইরে গিয়ে বলতে পারবেন না যে আমি এটা বলে দিছি। আমার কথা হলো আপনারা দলের ঐক্যের স্বার্থে কিছু করলে আমি এর সঙ্গে একমত। আপনারা আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন।’ দলীয় নেতা-কর্মীরা আলোচনা করে মুরাদ হোসেনের নাম প্রস্তাব করলে মন্ত্রী দলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক কাজ করতে বলেন।