
মোঃ রিপন হাওলাদার/দেলোয়ার হোসেন
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা হতে ডাক্তার ও নার্সদের এ্যাপ্রোন, মুখে মাক্স এবং গলায় ভুয়া আইডি কার্ড পরে অভিনব কায়দায় চুরি ও সংঘবদ্ধ পেশাদার চোর চক্রের সক্রিয় ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে (ডিএমপি)গুলশান থানা পুলিশ।
এ বিষয়ে আজ ৬ এপ্রিল ২০২৩ ইং তারিখ দুপুর ১২ টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার আঃ আহাদ বলেন,ঢাকা শহরের গুলশান সহ বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় বিভিন্ন ফ্ল্যাটে কখনো ডাক্তার কখনো নার্স পরিচয় দিয়ে প্রবেশ করে কতিপয় ব্যক্তিরা চুরি করে আসছিল।
এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সংঘবদ্ধ চক্রটিকে ধরতে গত ০৫/০৪/২০২৩ ইং
তারিখ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গুলশান বিভাগের গুলশান থানা পুলিশ একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযান কালে সুকৌশলে অভিনব পন্থায় বাসায় প্রবেশ করে চুরি করা চক্রের অন্যতম প্রধান আসামি আফসানা আক্তার মিম (২২)কে গুলশান থানাধীন এলাকার ২নং পুলিশ চেকপোষ্ট এর সামনে হতে ০৯.০০ ঘটিকার সময় গ্রেফতার করা হয়।
আটক মিম এর দেওয়া তথ্য ও স্বীকারোক্তি মোতাবেক ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে সহযোগী চক্রের আরো ০৫ (পাঁচ) সক্রিয় সদস্য ১। তন্ময় বিশ্বাস (৩০) ২। স্বপন শেখ (৪৫) ৩। মোঃ নুরুল ইসলাম (২৭) ৪। কলিম উদ্দিন কালু ওরফে কলিম উল্লাহ (৪০) ও ৫। মোঃ মোখলেছুর রহমান (৫১) দের পরবর্তীতে গ্রেফতার করা হয়।
এসময় সংঘবদ্ধ পেশাদার চোর চক্রের সদস্যদের কাছ থেকে চোরাই যাওয়া ০৬টি ল্যাপটপ, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১০টি মোবাইল ফোন ও ০২টি ব্যাগ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়েছেন গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা পরষ্পরের যোগসাজসে রাজধানী ঢাকা শহরের বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় ডাক্তারী এ্যাপ্রোন, মুখে মাক্স এবং গলায় আইডি কার্ড পরে সুকৌশলে অভিনব পন্থায় বাসায় প্রবেশ করে চুরি করতো।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে গুলশান থানাসহ বিভিন্ন থানায় মোট ১৪ টি নিয়মিত মামলা ও ০২টি সাজাসহ গ্রেফতারী পরোয়ানা রয়েছে।
আফসানা আক্তার এশা ওরফে মিম (২২) গুলশান, নিউমার্কেট, মোহাম্মদপুর ও তেজগাঁও থানায় ০১ বার করে মোট ০৪ বার এবং মোঃ মোখলেছুর রহমান (৫১) তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় ০১ বার করে এর আগে গ্রেফতার হয়েছিলো বলে জানানো হয়।
নগরবাসীকে সতর্ক বার্তা দিয়ে আ. আহাদ বলেন, কোনো বাসায় ডাক্তার বা নার্স পরিচয়ে কেউ ঢুকতে চাইলে প্রবেশ করতে দেবেন না।এরা বৈধ পরিচয় ধারী না ছন্মবেশী তা আগে যাচাই করতে হবে। যে কেউ আসুক না কেন পরিচয় নিশ্চিত হয়েই প্রবেশে অনুমতি দেওয়া উচিত। বাসা বা ভবন মালিকদের সেটা নিশ্চিত করতে হবে, দারোয়ান বা ভবনের নিরাপত্তা কর্মীদের তা জানাতে হবে।
বিস্মিত গুলশান এলাকার বাসিন্দা ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী জাহেদুল ইসলাম বলেন, তাদের চুরির কৌশল দেখে তাজ্জব হয়ে গেছি, এভাবেও চুরি হতে পারে অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে। আমার বাসা অনেকটা নিরাপত্তাবেষ্টিত ।
বাসার নিরাপত্তা প্রহরী, সিসিটিভি পর্যবেক্ষণ, আধুনিক নিরাপত্তা জনিত সবই ছিল। আমার মা অসুস্থ। তাকে মাঝেমধ্যে থেরাপি দিতে হয়। সেই তথ্য বলে ফিজিওথেরাপিস্ট পরিচয়ে বাসায় ঢোকে চোর মিম। মাত্র দুই থেকে তিন মিনিট বাসায় ছিলাম না। এর মধ্যেই মোবাইল ল্যাপটপ নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায় দুরন্দর চোর চক্রের সদস্য।
সংবাদ সম্মেলনে গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার জাহাঙ্গীর, সহকারী পুলিশ কমিশনার নিয়তি, গুলশান জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার নিউটন দাস। গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরমান আলী ও তদন্ত (ওসি) শাহনুর সহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।