তালিকা দিয়ে চিকিৎসক পদোন্নতির দিন শেষ। দলবাজ, তদ্বিরবাজ, লাইনবাজ ও ঘুষখোরদের আর পদোন্নতি মিলবে না। দীর্ঘ দিন পর সরকার এবার যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, মেধা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ১ হাজার ৫০০ চিকিৎসককে পদোন্নতি দিয়েছে।
এর মাধ্যমে বহু বছর পর সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেছেন, ডাক্তারের কাজ হলো চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে মানুষের জীবন বাঁচানো। একই সঙ্গে ছাত্রদের শিক্ষাদানের মাধ্যমে কোয়ালিটি সম্পন্ন ডাক্তার তৈরি করা। তাই যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, মেধা ও জ্যেষ্ঠতার বাইরে ডাক্তারদের পদোন্নতি দিলে চিকিৎসা শিক্ষায় অবনতি ঘটবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ডাক্তারদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে নগ্ন দলীয়করণ হয়েছে। এমনও হয়েছে ছাত্র চলে গেছেন শিক্ষকের ওপরে। এক্ষেত্রে যোগ্যতা বিবেচনা করা হতো না। চিকিৎসা পেশায় দলীয়করণ চালু হয় মূলত বিএনপি সরকারের আমলে। ঐ সময় বিএনপিসমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন ড্যাবের সুপারিশ ছাড়া ডাক্তারদের পদোন্নতি হতো না।
আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পরও সেই ধারা চালু ছিল। স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এবং বিএমএ-এর এক শ্রেণির নেতার সুপারিশ ও তদ্বিরে চিকিৎসক পদোন্নতি হচ্ছিল। এতে চিকিৎসা-সেবাব্যবস্থা ভেঙে পড়ছিল। দলীয় ভিত্তিতে অযোগ্যরা গুরুত্বপূর্ণ পদে চলে যান। আর চিকিৎসক পদোন্নতি দলীয়করণের মাধ্যমে অনেকের অবৈধ ইনকামও হয়েছে। এক পর্যায়ে বিষয়টি সরকারের হাইকমান্ডের নজরে আসে। যার পরিপ্রেক্ষিতে এবার সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশে যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, মেধা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ১ হাজার ৫০০ ডাক্তারের পদোন্নতি হয়েছে। এতে চিকিৎসকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছেন। অনেক ডাক্তার সরকারের এই সিদ্ধান্তে খুশি।
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আব্দুল মান্নান বলেন, নিয়মের বাইরে আমরা এক চুলও যায়নি। এবার যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, মেধা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে চিকিৎসকদের পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, আমরা অতীত নিয়ে ভাবি না। সামনের দিকে এগিয়ে যাব। এর বাইরে আমরা আর যাব না।
বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল বলেন, এভাবেই চিকিত্সকদের পদোন্নতি দিতে হবে। একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি আনুগত্যদের প্রাধান্য দিতে হবে। সব পদোন্নতির ক্ষেত্রে একই নিয়ম থাকা উচিত।
স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ বলেন, চিকিৎসকদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে অবশ্যই যোগ্যতা, দক্ষতা, মেধা ও জ্যেষ্ঠতার মূল্যায়ন হওয়া উচিত। তিনি বলেন, অনেক মেডিক্যাল কলেজে কনসালট্যান্ট, সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপকের পদ শূন্য রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে এসব পদ পূরণ করা উচিত।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খান মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ডাক্তারি টেকনিক্যাল পেশা। তারা চিকিৎসাসেবা দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষাও দেন। তাই ডাক্তারদের পদোন্নতিতে যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, মেধা ও জ্যেষ্ঠতার মূল্যায়ন থাকতে হবে।
মুগদা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, ডাক্তারি পেশাকে অন্য পেশার সঙ্গে তুলনা করা যাবে না। তাই পদোন্নতিতে যোগ্যতা, মেধা ও জ্যেষ্ঠতার মূল্যায়ন করতে হবে। তাহলে কোয়ালিটি সম্পন্ন ডাক্তার তৈরি হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক
মোহাম্মদ বেলাল হোছাইন ভূঁইয়া
01731 80 80 79
01798 62 56 66
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদক
আল মামুন
01868974512
প্রধান কার্যালয় : লেভেল# ৮বি, ফরচুন শপিং মল, মৌচাক, মালিবাগ, ঢাকা - ১২১৯ | ই-মেইল: news.sorejomin@gmail.com , thana.sorejomin@gmail.com
©copyright 2013 All Rights Reserved By সরেজমিনবার্তা
Family LAB Hospital